সংক্রমণ বাড়ছে, ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা
গত কয়েক সপ্তাহ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ভারতে ফের বাড়ছে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দেশটিতে করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ২৩০ জন এবং মারা গেছেন ৫৫৫ জন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত সাত দিন ধরেই ভারতে বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তবে শুক্রবার করোনায় দৈনিক – আক্রান্ত ও মৃতের হিসাব ছিল গত তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিজ্ঞাপন
বার্তাসংস্থা রয়টার্স গঠিত আন্তর্জাতিক মেডিকেল বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল জানিয়েছে, দেশটিতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি, কেরালায়। তারপর প্রায় বছরজুড়ে প্রচুরসংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যু ঘটার পর গত বছর অক্টোবর থেকে কমতে শুরু করেছিল করোনার প্রকোপ; ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল ভারতে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু তারপর মার্চের মাঝামাঝি থেকে ফের বাড়তে শুরু করে দেশটিতে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ। এপ্রিল মাসে শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, এপ্রিল ও মে- এই দুই মাসে ভারতে করোনায় মারা গেছেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ, আক্রান্ত হয়েছেন কয়েক কোটি।
তারপর জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে ভারতে কমতে থাকে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা, অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসা শুরু করে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’; তবে আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও জীবাণুবিদরা জানিয়েছেন, চলতি বছর অক্টোবর থেকে ভারতে করোনার আর একটি ঢেউ আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে।
২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত করোনা মহামারির দেড় বছরে ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৪৪ জন এবং মারা গেছেন মোট ৪ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪ জন। এছাড়া দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ৪ লাখ ৫ হাজার ১২৮ জন।
চলতি বছর ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৩৭ শতাংশ করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন।
এছাড়া, সম্প্রতি দেশের জনগণের দেহে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সংক্রান্ত একটি জরিপ চালিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেই জরিপে দেখা গেছে, ভারতের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৬৭ দশমিক ৬ শতাংশের দেহে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।
অবশ্য এই তালিকায় করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ নেওয়া ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ