বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদেরকে নিজ নিজ দেশে জলবায়ু সম্পর্কিত জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শনিবার ‘ক্লাইমেট অ্যামবিশন’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ওই সম্মেলনের সূচনা বক্তব্যে গুতেরেস এ আহ্বান জানান। খবর আল-জাজিরার।

২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তির পঞ্চমবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে বিশ্বের প্রতিটি দেশকে কার্বন নিঃসরণ প্রতিশ্রুত মাত্রায় কমিয়ে আনারও আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। করোনার কারণে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে ৭০টিরও বেশি দেশের নেতারা অংশ নেন।

আমরা যে একটি ভয়াবহ জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি, কেউ কি তা এখনো অস্বীকার করতে পারে?

জাতিসংঘ মহাসচিব

সম্মেলেনে তাদের উদ্দেশে অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমরা যে একটি ভয়াবহ জরুরি অবস্থার মধ্যে আছি, কেউ কি তা এখনো অস্বীকার করতে পারে? এ কারণেই আজ আমি বিশ্বের সব নেতাদের তাদের দেশে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

তিনি আরও বলেন, পাঁচ বছর আগে প্যারিস সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে (২.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) সীমাবদ্ধ রাখার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটা পর্যাপ্ত নয় এবং অনেক দেশ সেটা বাস্তবায়নের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের হার নামিয়ে আনার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত জলবায়ু প্রসঙ্গে বৈশ্বিক এই জরুরি অবস্থা জারি রাখার আহ্বানও জানান তিনি

জাতিসংঘ মহাসচিব জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় যদি এখনই তাদের মনোভাব পরিবর্তন না করেন তাহলে আমরা চলতি শতাব্দীতে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি দেখব; যেটা মারাত্মক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। 

বিশ্বের সকল নেতার প্রতি নিজ নিজ দেশে জলবায়ু সম্পর্কিত জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানানো ছাড়া বিশ্বে কার্বন নিঃসরণের হার নামিয়ে আনার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত জলবায়ু প্রসঙ্গে বৈশ্বিক এই জরুরি অবস্থা জারি রাখার আহ্বানও জানান তিনি।

সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের মধ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বক্তব্য দেন। তিনি তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্যারিস চুক্তিকে সমর্থন করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৃহত্তর বৈশ্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ মহাসচিবের এই আহ্বানের আগে শুক্রবার নিজেদের বিভিন্ন জীবাশ্ম জ্বালানি সম্পর্কিত প্রকল্পে সরকারের প্রত্যক্ষ সমর্থন বন্ধ করার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছিল যুক্তরাজ্য।

দেশটি কীভাবে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ প্রতিশ্রুত মাত্রায় কমিয়ে আনবে তার একটা বিস্তারিত প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে বলে ওই প্রতিবেদনে জানিয়েছে আল-জাজিরা।

এএস