করোনাভাইরাসের প্রভাব এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য হ্রাসের কারণে সরকারের রাজস্ব কমে যাওয়ায় বিশাল বাজেট ঘাটতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে কাতার। ২০২১ সালে চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজেট ঘাটতিতে পড়তে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ এই দেশ।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, চলতি বছরের তুলনায় ২০২১ সালে কাতারের ব্যয়ের  পরিমাণ হবে ৩৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন রিয়াল (৩ হাজার ৪ শ’ কোটি ৬০ লাখ)। ২০১৭ সালে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ দোহার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর আগামী বছর কাতার সর্বোচ্চ আর্থিক ঘাটতি দেখছে।

ব্যয় সংকুলানের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানিকারক এই দেশটি ইতোমধ্যে গত বছরের তুলনায় সরকারি ব্যয় সাড়ে ৭ শতাংশ হ্রাস করেছে। বাজেটে প্রতি ব্যারেল তেলের মূল্য ধরা হয় গড়ে ৪০ মার্কিন ডলার।

গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির সরকার প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ৫৫ ডলার নির্ধারণ করলেও ২০২১ সালের বাজেটে কিছু অর্থ উদ্বৃত্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করেছিল। কিন্তু তেলের মূল্য হ্রাস পেতে থাকায় সরকারি রাজস্বের ওপর চাপ তৈরি হয়।

চলতি বছরের প্রথমার্ধ্বে এই ঘাটতি ছিল ১.৫ বিলিয়ন রিয়াল; পরিস্থিতি বিবেচনা করে অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ বছরের শেষের দিকে কাতার বড় ধরনের ঘাটতিতে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তবে এই ঘাটতির আকার এখনও অজানা।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়া এবং কার্বনমুক্ত পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি ধীরে ধীরে বিকশিত হয়ে ওঠার প্রেক্ষিতে পারস্য উপসাগরের তীর ঘেঁষা রাষ্ট্রগুলো এখন পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং শক্তিশালী করে তোলার বিষয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে।

গত জুনে সরকারের অন্যান্য সব বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের বেতন ৩০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ জারি করে কাতারের অর্থ মন্ত্রণালয়। এই শর্ত মানতে কারো আপত্তি থাকলে তাকে অব্যাহতি প্রদান করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। 

তবে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণে দেশটির বৃহৎ সংখ্যক মানুষকে কর্মহীন বা বেকারত্বের মুখে পড়তে হতে পারে বলে অর্থনীবিদরা যে শঙ্কা করেছিলেন এখন ‍পর্যন্ত সেটি দেখা যায়নি। গত মার্চ থেকে নভেম্বরের মধ্যে দেশটিতে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে যায়। জনসংখ্যা হ্রাসের এই হার ১০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলে গত এপ্রিলে উপসাগরীয় ৬টি রাষ্ট্রের কয়েকটিকে সতর্ক করেছিল অক্সফোর্ড ইকোনোমিকস।

সংকটের এই সময় পার হলে পুনরায় কর্মীদের বেতন পুর্নবিন্যাসের প্রত্যাশা করছে কাতার সরকার। সেক্ষেত্রে আগামী বছর কর্মীদের বেতন মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমানো হতে পারে।

সূত্র : ব্লুমবার্গ।

এসএস