আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী মধ্য-এশিয়ার কয়েকটি দেশের কাছ থেকে অস্ত্র ও হেলিকপ্টার কেনার নতুন আদেশ পেয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান আফগানিস্তান দখলে নেওয়ার পর প্রতিবেশীদের কাছ থেকে অস্ত্র ক্রয়ের এই আদেশ মস্কো পেয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে।

সাবেক-সোভিয়েতভূক্ত আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোতে মস্কোর সামরিক ঘাঁটি আছে; দুই দশক পর তালেবান আবারও ক্ষমতায় আসায় প্রতিবেশীদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

রাশিয়ার সরকারি অস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রোসোবোরোনএক্সপোর্টের প্রধান আলেকজান্ডার মিখিভ সংবাদসংস্থা আরআইএ নোভোস্তিকে বলেন, আমরা রাশিয়ার হেলিকপ্টার, আগ্নেয়াস্ত্র এবং আধুনিক সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের জন্য ইতোমধ্যে ওই অঞ্চলের দেশগুলোর কাছ থেকে কিছু আদেশ পাওয়ার পর কাজ শুরু করেছি।

কাবুলের নতুন নেতৃত্বের ব্যাপারে রাশিয়া এখনও সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আফগানিস্তানের জঙ্গিরা শরণার্থীর বেশে প্রতিবেশী দেশগুলোতে প্রবেশ করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে আফগানিস্তানের সীমান্ত ঘেঁষে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছে উজবেকিস্তান এবং তাজিকিস্তান। মস্কো নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট সম্মিলিত নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থার (সিএসটিও) সদস্যদের নিয়ে আগামী ৭ থেকে ৯ নভেম্বর তিনদিন কিরগিজস্তানে সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই জোটের গণমাধ্যম বিভাগের বরাত দিয়ে রাশিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স বলেছে, এসব উদ্যোগে অবৈধ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ধ্বংসের দিকে মনোনিবেশ করা হবে; যারা অতীতে সিএসটিও সদস্য রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে হামলা করেছিল।

তালেবান বলেছে, তারা মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর জন্য হুমকি নয়। সাবেক-সোভিয়েতভুক্ত দেশগুলো পূর্বে আক্রান্ত হওয়ার পর এর দায় আফগান ইসলামপন্থীদের ওপর চাপানো হয়েছে।

গত ১৫ আগস্ট তালেবান রাজধানী কাবুলের দখল নেওয়ার পর আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে দেশটির রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশ ছাড়তে মরিয়া হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন। আগামী ৩১ আগস্টের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সৈন্য-নাগরিক এবং আফগান সহযোগীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে পশ্চিমা সামরিক বাহিনী।

তালেবান ইতোমধ্যে হুমকি দিয়ে বলেছে, নির্ধারিত সময়ের পর পশ্চিমারা আফগানিস্তানে অবস্থান করলে সেজন্য পরিণতি ভোগ করতে হবে। তালেবানের এই হুমকির পর লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ ব্যাপক দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হচ্ছে। যদিও পশ্চিমা কয়েকটি দেশ বলেছে, এই সময়ের মধ্যে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ করা সম্ভব নয়।

এদিকে, বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়া সতর্কতা জারি করে বলেছে, আফগান তালেবানের পুরোনো শত্রু ও জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুসারী ইসলামিক স্টেট খোরাসানের (আইএসআইএস-কে) সদস্যরা কাবুল বিমানবন্দর এলাকায় ভয়াবহ প্রাণঘাতী হামলা চালাতে পারে। এমনকি এই হামলার ভয়াবহতা কল্পনাতীত হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

এসএস