চলতি মাস থেকে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট সঙ্গে রাখা ও প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। প্রাথমিকভাবে দেশটির ইংল্যান্ড রাজ্যে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এই নির্দেশ জারি ও কার্যকর করা হবে।

তারপর পর্যায়ক্রমে যুক্তরাজ্যের অপর দুই রাজ্য- স্কটল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডকেও এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে বলে সম্প্রতি বিবিসিকে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের টিকা বিষয়ক মন্ত্রী নাদিম জাহউই।

টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করার পর যে সনদ দেওয়া হয়, তাকেই ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বলা হয় ইউরোপে। রোববার বিবিসির টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান অ্যান্ড্রু মার শোতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাজ্যের টিকা বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ইংল্যান্ডে ১৮ বছরের বেশি বয়স্কদের সবাইকে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম শেষ হবে।

কার্যক্রম শেষ হলেই এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হবে। এটি  জারি ও কার্যকর করা হলে ইংল্যান্ডের রেস্তোঁরা, পানশালা, নৈশক্লাব, জাদুঘর, পার্ক, সুপারমার্কেটসহ সব জনসমাগমপূর্ণ স্থানে আগতদের অবশ্যই টিকার ডোজ সম্পূর্ণবিষয়ক সনদ সঙ্গে রাখতে হবে এবং কর্তৃপক্ষ সেই সনদ দেখতে চাইলে তা দেখাতে হবে।

গত প্রায় দু’মাস ধরে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করার আলোচনা চলছে যুক্তরাজ্যে এবং দেশটির জনগণের একাংশ এর তীব্র বিরোধিতা করছেন। সম্প্রতি এই সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের আইনসভা হাউস অব কমন্সের কয়েকজন আইনপ্রণেতাও।

তবে এ বিষয়ে সরকার স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে নাদিম জাহাউই বলেন, ‘মহামারি প্রতিরোধে দীর্ঘদিন টানা লকডাউন ও বিধিনিষেধের মধ্যে ছিল যুক্তরাজ্য। দেশের অর্থনীতিতে তার ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’

‘অর্থনীতি নিজে নিজে ঠিক হতে পারবে না। এটি ঠিক করতে হবে। আবার করোনা যেহেতু এখনও বিশ্ব থেকে বিদায় নেয়নি, তাই সংক্রমণ প্রতিরোধের বিষয়টিতেও মনযোগ রাখতে হবে।’

‘এ কারণে, সবদিক বিবেচনায় নিয়েই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপাতত আমাদের সামনে আর কোনো বিকল্প পথ নেই।’

২০২০ সালে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বের যেসব রাষ্ট্র প্রাণঘাতী এই রোগে ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে যুক্তরাজ্য অন্যতম। করোনায় দৈনিক আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের হালনাগাদ সংখ্যা প্রকাশকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬৯ লাখ ৪১ হাজার ৬১১ জন এবং মারা গেছেন মোট ১ লাখ ৩৩ হাজার ১৬১ জন।

বর্তমানে দেশটিতে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ১২ লাখ ২১ হাজার ৯৫৯ জন।

সূত্র : বিবিসি

এসএমডব্লিউ