পরীক্ষামূলক ভাবে একের পর এক মিসাইল ছুড়ছে উত্তর কোরিয়া। এক্ষেত্রে তারা আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি বা সমালোচনারও তোয়াক্কা করছে না। দুই দিনের ব্যবধানে ক্রুজ মিসাইল ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ার পর বুধবার ফের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পিয়ংইয়ং। এবার রেলওয়ে বা ট্রেনে বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করে দেশটি।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পারমাণবিক শক্তিধর না হয়েও প্রথম দেশ হিসেবে বুধবার সাবমেরিন থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইল (এসএলবিএম) নিক্ষেপ করে দক্ষিণ কোরিয়া।

এরপরই রেলওয়েতে বহনযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করে উত্তর কোরিয়া। এর মাধ্যমে মূলত প্রতিবেশী ও প্রতিপক্ষ দেশগুলোকে নিজের শক্তির জানান দিলেন কিম জং উন।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, রেলওয়েতে বহনযোগ্য নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে বুধবার মিসাইল নিক্ষেপ করে পিয়ংইয়ং। এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন, দেশের বিরুদ্ধে হুমকি সৃষ্টিকারী যেকোনো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রেলওয়ের মাধ্যমে পাল্টা জোরালো হামলা পরিচালনা করা সম্ভব হয়।

কেসিএনএ’র তথ্য অনুযায়ী, রেলওয়ে থেকে মিসাইল নিক্ষেপের পর সেগুলো ৮০০ কিলোমিটার (৪৯৭ মাইল) উড়ে গিয়ে উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের একটি লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত করে।

এর আগে বুধবার দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান জানিয়েছিল যে, উত্তর কোরিয়া থেকে দু’টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে তারা শনাক্ত করেছেন। এর ঠিক দু’দিন আগে দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। সফল পরীক্ষার পরে মিসাইলগুলো সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মিসাইলগুলো পরমাণু পরীক্ষার অংশ হতে পারে।

গত সোমবার পরীক্ষা চালানো এসব মিসাইল ১৫০০ কিলোমিটার (৯৩০ মাইল) দূরের লক্ষবস্তুতে সফলভাবে আঘাত করতে পারে। অর্থাৎ পিয়ংইয়ংয়ের ক্রুজ মিসাইল জাপানের বেশিরভাগ স্থানে আঘাত করতে সক্ষম।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রও আশঙ্কা করছে যে, মিসাইলগুলো পরমাণু পরীক্ষার অংশ হতে পারে। অবশ্য জাতিসংঘ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা নিষিদ্ধ করেনি।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মনে করেন, ক্রুজ মিসাইলের চেয়ে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বেশি ধ্বংসাত্মক। কারণ এটি বড় আর শক্তিশালী বোমা বহন করতে পারে এবং অনেক দ্রুত বেশি দূরে যেতে পারে।

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া বহুদিন ধরেই একে-অপরের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রতিযোগিতা করে আসছে। নিয়মিত বিরতিতে উভয় দেশ নতুন নতুন মিসাইল ও অন্যান্য অস্ত্র সামনে এনে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়ে থাকে।

কেসিএনএ জানিয়েছে, বুধবার ট্রেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের বিষয়টি পরিচালনা করে উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর রেলওয়ে-বর্ন মিসাইল রেজিমেন্ট। চলতি বছরের শুরুর দিকে এই রেজিমেন্ট গঠন করা হয়ছিল।

টিএম