সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও গৃহবন্দি মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে দেশটির জান্তা সরকার। গত বছরের ওই নির্বাচনে সু চির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিপুলভাবে জয়লাভ করেছিল। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে নির্বাচনী জালিয়াতি এবং আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে। অবশ্য অভিযোগ আনার পর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আদালতে কার্যক্রম শুরু হবে সেটি ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

অং সান সু চির পাশাপাশি মিয়ানমারের আরও ১৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ এনেছে দেশটির জান্তা সরকার। ওই ১৫ জনের মধ্যে মিয়ানমারের সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং নির্বাচন কমিশনের প্রধানও রয়েছেন।

চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।

অভ্যুত্থানের পর ৭৬ বছর বয়সী গৃহবন্দি সু চির বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার। মামলাগুলো যেসব অভিযোগে করা হয়েছে, সেসব হলো- রাষ্ট্রের গোপন তথ্য পাচার, নিয়মবহির্ভূতভাবে ওয়াকি টকি রাখা ও ব্যবহার, ক্ষমতায় থাকাকালে ঘুষ গ্রহণ, নিজের দাতব্যসংস্থার নামে অবৈধভাবে ভূমি অধিগ্রহণ ও করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় গাফিলতি।

গত জুন থেকে রাজধানী নেইপিদোর বিশেষ সামরিক আদালতে এসব মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)-র তথ্য অনুযায়ী, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তা সরকারের হাতে দেশটিতে ১ হাজার ২৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ১০ হাজারের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে।

টিএম