মিয়ানমার নিয়ে উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ ও পশ্চিমা বিশ্ব
নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সেনা অভ্যুত্থান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ ও দেশটিতে দায়িত্বরত পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ ও সংগঠনের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা।
উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশটির সেনাবাহিনীসহ বিবদমান সব পক্ষকে সহিংসতার পথ পরিত্যাগ করে নিয়মতান্ত্রিক পথ অনুরণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমি মিয়ানমারের বিবদমান সব পক্ষকে কোনো প্রকার উস্কানি বা উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির পরিকল্পনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি ৮ নভেম্বর নির্বাচনের ফলাফল ও জয়ী গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শণেরও অনুরোধ জানাচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশটিতে বর্তমানে যে সংকট দেখা দিয়েছে, আইনগত বাধ্যবাধকতা ও গণতান্ত্রিক নিয়মনীতি অনুসরণ করেই এর সবচেয়ে কার্যকর সমাধান বের করা সম্ভব।’
বিজ্ঞাপন
পৃথক আরেক বিবৃতিতে মিয়ানমারে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতরা বলেছেন, ‘ আমরা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীসহ সব পক্ষকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। গণতন্ত্রে মিয়ানমারের প্রত্যাবর্তনের পথে কোনও বাধা এলে আমরা কখনোই তা সমর্থন করব না।’
গত বছরের নভেম্বরে দেশটির সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এই নির্বাচনে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন দেশটির রাজনৈতিক দল এনএলডি ভূমিধস জয় লাভ করে।
এই নির্বাচনের পর বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগির প্রশ্নে অস্বস্তি শুরু হয় মিয়ানমার সেনাবাহিনীতে। এর প্রেক্ষিতেই নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ভোটার তালিকা প্রকাশে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানায় সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, নভেম্বরের নির্বাচনে দেশজুড়ে অন্তত ৮৬ লাখ ভোট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে তথ্য রয়েছে তাদের কাছে। এই তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য ভোটার তালিকা প্রয়োজন। তবে এখন পর্যন্ত দেশটির নির্বাচন কমিশন সেই তালিকা প্রকাশ করেনি।
এনএলডি এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর এই টানাপোড়েনের মধ্যে বৃহস্পতিবার দেশের সংবিধান বাতিলের হুমকি দেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিং অং হ্লেইং। দেশটির সেনাবাহিনী প্রকাশিত পত্রিকা দৈনিক মায়াবতীতে এক নিবন্ধে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালের সংবিধান দেশের ‘সব আইনের মা’ এবং এর প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো উচিত; কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে সেই সংবিধান বাতিলের প্রয়োজন হতে পারে।
তবে নভেম্বর নির্বাচনে সেনাবাহিনী জালিয়াতির অভিযোগ করলেও দেশটির ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ