সৌদি আরবে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধারা। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলীয় জাজান শহরে হুথিদের ওই মিসাইলটি আঘাত করে। সৌদির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার হুথিদের করা ওই হামলায় নিহত দুই জনের একজন সৌদি নাগরিক এবং অন্যজন ইয়েমেনের নাগরিক। এছাড়া হামলায় আরও ৭ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের ৬ জন সৌদির এবং একজন জাজান শহরের বাঙালি বাসিন্দা। তবে আহত ওই বাঙালি ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিক কি না নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া হামলায় মোট ১২টি গাড়ি এবং দু’টি দোকান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এদিকে এই হামলার পরপরই ইয়েমেনে হুথি যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। এছাড়া হুথিদের এই হামলার জবাবে ভবিষ্যতে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ আরও বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়েছে জোটটি।

পরে হুথিদের পরিচালিত আল মাসিরাহ টিভিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার চালানো সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের পাল্টা হামলায় এক শিশু ও এক নারী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ৭ জন আহত হয়েছেন।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

অভিযান শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।

ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশটি।

টিএম