সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটির সংকট ক্রমে বেড়েই চলেছে। কাবুলের শাসকগোষ্ঠীর আন্তর্জাতিক কোনো স্বীকৃতি না থাকায় ভয়াবহ আর্থিক সংকট চলছে দেশটিতে। আর এবার মাসের পর মাস ধরে কোনো বেতন না পেয়ে পদত্যাগ করেছেন চীনে নিযুক্ত আফগান রাষ্ট্রদূত।

চলতি মাসের শুরুতে ওই রাষ্ট্রদূত আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। সোমবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে নিযুক্ত সদ্য পদত্যাগকৃত ওই আফগান রাষ্ট্রদূতের নাম জাভিদ আহমেদ কায়েম। তালেবানের ক্ষমতাগ্রহণের আগে থেকেই ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে চীনে দায়িত্বপালন করছিলেন তিনি।

পদত্যাগপত্রে জাভিদ আহমেদ কায়েম জানান, দূতাবাসে দায়িত্বপালনরত কর্মকর্তারা গত ছয় মাস ধরে কোনো বেতন পাননি। আর তাই ফোনের উত্তর দেওয়ার জন্য মাত্র একজন স্টাফকে রেখে যাওয়া হচ্ছে।

সোমবার টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় জাভিদ আহমেদ কায়েম জানান, ‘সম্মানজনক দায়িত্বের সমাপ্তি, রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব থেকে আমি পদত্যাগ করেছি। আফগানিস্তানের পতাকা ও আফগানদের প্রতিনিধিত্ব করাটা সম্মানের। (পদত্যাগের পেছনে) অনেক কারণ থাকতে পারে, এর কিছু ব্যক্তিগত এবং কিছু পেশাগত। সেসব কারণ আমি এখানে প্রকাশ করতে চাই না। একটি হ্যান্ডওভার নোটের মাধ্যমে আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি।’

তবে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত ১ জানুয়ারি দেওয়া ওই পদত্যাগপত্রে কায়েম উল্লেখ করেন, ‘যেহেতু আমরা কাবুল থেকে গত ছয় মাস যাবৎ বেতন পাইনি, তাই আর্থিক বিষয়টির সমাধানের জন্য কূটনীতিকদের মধ্য থেকে আমরা একটি কমিটি নিযুক্ত করি।’ পত্রটির ছবিও সোমবার টুইটারে পোস্ট করা হয়।

গত আগস্টে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর, সেখানে কর্মরতদের দেওয়ার জন্য তাকে দূতাবাসের ব্যাংক হিসাব থেকে অনেক কষ্টে অর্থ সংগ্রহ করতে হয়েছে বলে জানান জাভিদ আহমেদ কায়েম। তারপরও তিনি তার উত্তরসূরির জন্য কিছু অর্থ রেখে গিয়েছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই পত্রে জাভিদ কায়েম উল্লেখ করেন, ‘২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে এক লাখ মার্কিন ডলার অবশিষ্ট আছে।’

কায়েম তার ওই পত্রে মৃতপ্রায় একটি দূতাবাসের চিত্র তুলে ধরে জানান, দূতাবাসের পাঁচটি গাড়ির চাবি তিনি তার অফিসে রেখে দিয়েছেন এবং অন্য সব কূটনীতিক চলে যাওয়ার পর কেবল ফোনকল রিসিভ করার জন্য স্থানীয়ভাবে একজন কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অবশ্য রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব ছাড়লেও এরপর তিনি কোথায় যাবেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি জাভিদ আহমেদ কায়েম।

টিএম