ছবি: রয়টার্স

ওমিক্রনের প্রভাবে দৈনিক সংক্রমণ বাড়লেও অধিকাংশ করোনা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়ারল্যান্ডের সরকার। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন শুক্রবার এক টেলিভিশন ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন।

শুক্রবারের ভাষণে করোনাকে একটি ‘মৌসুমি রোগ’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন বলেন, ‘গত প্রায় দুই বছর ধরে অনেক অশুভ দিন আমরা দেখেছি, কিন্তু আজ একটি ভালো খবর দিতে আমি আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।’

‘করোনা একটি মৌসুমি রোগ এবং এই রোগটিকে নিয়েই আমাদের সামনে এগোতে হবে। যদি এটি আমরা মেনে নেই, তাহলে বর্তমানে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিধিনিষেধগুলোর কোনো যৌক্তিক আবেদন আর থাকে না।’

‘এবং আমরা সেই পথে চলারই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল (শনিবার) থেকে অধিকাংশ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার থেকে আয়ারল্যান্ডে আর বাধ্যতামূলক হোম অফিস থাকছে না, কর্মীরা চাইলে সশরীরে কাজে যোগ দিতে পারবেন। অভ্যন্তরীন ও মুক্ত এলাকায় জনসমাগমে কোনো বাধা দেওয়া হবে না এবং নৈশক্লাব, পানশালা ও রেস্তোরাঁ আগের মতো স্বাভাবিক সময়ে খোলা ও বন্ধ করা যাবে। এছাড়া জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যেতে হলে কোভিড পাস বা সামাজিক দূরত্ববিধি আর মেনে চলার প্রয়োজন পড়বে না।

কিছু জনসমাগমপূর্ণ স্থানে অবশ্য লোকজনকে মাস্ক পরতে হতে পারে, এছাড়া যারা করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাদের আইসোলেশনে থাকার নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়নি।

৫০ লাখ মানুষের দেশ আয়ারল্যান্ডে মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। ২০২০ সালে মহামারির শুরু থেকে টানা প্রায় ১৮ মাস লকডাউনে থাকার পর ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা শুরু করেছিল দেশটি।

কিন্তু করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া ওমিক্রনের দাপটে নভেম্বরের শেষ থেকে দেশটিতে হু হু করে সংক্রমণ বাড়া শুরু করলে ডিসেম্বরের দ্বীতিয় সপ্তাহে ফেল আয়ারল্যান্ডে লকডাউন জারি করে দেশটির সরকার।

২০২০ সালে মহামারি শুরু হওয়ার পর প্রায় ১৮ মাস লকডাউনে থাকার পর ২০২১ সালের অক্টোবর থেকৈ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। দেশটির দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।

সফল টিকাদান কর্মসূচির জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে শুক্রবারের ভাষণে আয়ার‌ল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খুবই চমৎকার একটি টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছি। জনগণ যেভাবে তাতে সাড়া দিয়েছেন, সহযোগিতা করেছে- সেটিই গোটা পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। এখন আর মহামারিকে ভয় পাওয়ার কারণ নেই।’

সূত্র: এএফপি

এসএমডব্লিউ