পাকিস্তানের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধুতে চলতি জানুয়ারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৬ জন শিশু ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির জাতীয় দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদেন এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

সিন্ধু প্রদেশের বৃহত্তম জেলা থরপার্কার ও তার আশপাশের এলাকাগুলোতে গত ২৪ দিনে ঘটেছে এসব মৃত্যু। অপরিণত বয়সে মাতৃত্ব ও এই বিষয়ক নানা জটিলতা, বিভিন্ন রোগশোক ও আবহাওয়াগত প্রভাব, দারিদ্র্য ও সচেতনতার অভাবকে শিশু ও নবজাতকদের অকাল মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন সিন্ধুর প্রাদেশিক স্বাস্থ্য সেবা দফতরের উপ মহাপরিচালক ডা. ইরশাদ মেমন।

দ্যা এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে এ সম্পর্কে ডা. মেমন বলেন, ‘ওই এলাকায় যেসব দম্পতির ১০ বা তারও বেশি সন্তান আছে, সেই পরিবারগুলোতেই ঘটেছে অধিকাংশ মৃত্যু।’

‘আপাতভাবে মনে হতে পারে, বিভিন্ন রোগশোক ও অপুষ্টিতে ভুগেই অকালমৃত্যু হয়েছে এসব শিশু ও নবজাতকের। তবে এগুলো সরাসরি কারণ হলেও বেশকিছু প্রভাবক এই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মৃত্যুর জন্য দায়ী।’

‘যেমন- প্রদেশের ওই অঞ্চলটিতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা অবকাঠামোগতভাবেই দুর্বল, যার মূল শিকার নারী ও শিশুরা। এছাড়া দারিদ্র্য, কুসংস্কার, ও চরমভাবাপন্ন জলবায়ুও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক।’

প্রাদেশিক স্বাস্থ্যসেবা দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ দিনে থরপার্কার জেলার মিঠি এলাকায় ৮, ইসলামকোটে ৭, ডিপলোতে ৬, চাচরোতে ৩, নাগারপার্কারে ৭ এবং জেলার আশপাশের কয়েকটি এলাকায় ৫- মোট ৩৬ শিশু ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

দফতরের বিবৃতিতে অপরিণত বয়সে মাতৃত্ব ও এই তার ফলে দুর্বল শিশু প্রসবকে এই শিশুমৃত্যুর কারণ হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুষ্টিহীনতা, রক্ত স্বল্পতা, নিউমোনিয়া, হাম, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের পাশাপাশি আবহাওয়াগত প্রভাব, দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা ও সচেতনতার অভাবকেও মৃত্যুর জন্য দায়ী করা করেছে স্বাস্থ্যসেবা দফতর।

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের এই এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরেই উপেক্ষিত এবং অবহেলিত। দেশটির যেসব এলাকা স্বাস্থ্যসেবা, পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা ও পুষ্টিগত দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে সেসবের মধ্যে অন্যতম থরপার্কার ও তার আশপাশের এলাকাগুলো।

এর পাশাপাশি শিশুমৃত্যুর হারও দীর্ঘকালীন সমস্যা থরপার্কার ও তার আশপাশের জেলাগুলোতে। গত বছর ২০২১ সালে সিন্ধুর থরপার্কার ও তার আশপাশের কয়েকটি জেলায় মৃত্যু হয়েছিল ৬০০ শিশুর। তার আগের বছর ২০২০ সালে ওই এলকায় মারা গিয়েছিল ৫০০ শিশু।

এসএমডব্লিউ