চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং রাজ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে তৈরি বন্দিশিবিরে সংখ্যালঘু উইঘুরসহ অন্যান্য মুসলিম নারীদের ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ ধরনের সংঘটিত নৃশংসতার পরিণতি গুরুতর হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বুধবার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জিনজিয়াং রাজ্যের বন্দি শিবিরে উইঘুর মুসলিমসহ অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর নারীদের নিয়মিতভাবে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কারণ যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, এ ধরনের নিষ্ঠুর আচরণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গুরুতর পরিণতি ডেকে আনে।’

‘গুরুতর পরিণতি’ বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঠিক কি বুঝিয়েছে – তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি ওই মুখপাত্র। তবে তিনি বলেছেন, জিনজিয়াংয়ের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানাবে এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে চীন সরকারকে আহ্বান জানাবে।

জিনজিয়াং রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর চীন সরকারের নির্যাতনের প্রেক্ষিতে দেশটির বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তার উত্তরসূরী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ব্যাপারে এখনও প্রকাশ্যে কিছু না বললেও চীনের বিষয়ে প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ নিতে তার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মার্কিন প্রশাসন যে কোনও দ্বিধায় ভুগবে না— ইতোমধ্যে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের কাছে।

সম্প্রতি জিনজিয়াংয়ে মুসলিম নারীদের ওপর নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। জিনজিয়াং রাজ্যের বন্দিশিবিরে ছিলেন এমন মানুষ ও ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দি নারীদের পরিকল্পিতভাবে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিষয়টি তারা প্রত্যক্ষ করেছেন এবং এর প্রমাণ দেখেছেন।

বেইজিং অবশ্য বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। চীন সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, মুসলিমদের মধ্যে চরমপন্থা ও বিচ্ছিন্নতাবাদ ঠেকাতে কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব মানুষকে ‘সুপথে’ ফেরানোর কাজ করছে তারা।

বিবিসির প্রতিবেদন নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের পক্ষ থেকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েবিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘কোনও প্রমাণ ছাড়াই এটা করা হয়েছে। বিবিসি যেসব মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছে সেসব মানুষ মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। এর আগেও এমন কাজ করেছে তারা।’ 

সূত্র: আলজাজিরা।

এসএমডব্লিউ