মিয়ানমারে এবার টুইটার-ইনস্টাগ্রাম বন্ধ
ফেসবুকের পর এবার টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। সোমবারের অভ্যুত্থান নিয়ে দেশটিতে বিক্ষোভ জোরদার হওয়ার মুখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বন্ধ করে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার মানুষের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে স্বৈরশাসকরা। খবর বিবিসি অনলাইনের।
মিয়ানমারের অন্যতম ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিকম কোম্পানি টেলিনর বিবিসিকে নিশ্চিত করেছে, পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত দেশে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে প্রবেশাধিকার বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাদের।
বিজ্ঞাপন
স্থিতিশীলতার নাম করে গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের নেতারা অন্যতম জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বন্ধ করে দেয়। তবে এরপরও মিয়ানমারজুড়ে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ জোরালো হচ্ছে।
শুক্রবার দেশের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে সমবেত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দেশনেত্রী অং সান সু চিসহ ক্ষমতাচ্যুত দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে স্বৈরশাসনবিরোধী বিক্ষোভ করেন।
বিজ্ঞাপন
সু চির আইনজীবী জানিয়েছেন, তাদের নেত্রী এখন গৃহবন্দি রয়েছেন। আমদানি-রপ্তানি আইন লঙ্ঘনের দায়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এর আগে পুলিশ তাকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর প্রথম প্রতিবাদ শুরু করেন দেশটির চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল শিক্ষার্থী ও স্বাস্থ্যর্মীরা। এরপর থেকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ক্রমেই বেড়েছে। রাজধানী নেপিডোর বাইরে অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ জোরালো হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধের কারণ
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে অভ্যুত্থানের খবর আসার পর বার্মিজরা ফেসবুকে এর প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। কারণ দেশটিতে ফেসবুক খুবই জনপ্রিয়। তথ্য ও সংবাদ প্রাপ্তির প্রাথমিক উপায় ফেসবুক। কিন্তু তিনদিন পর জান্তা সরকার ফেসবুক ব্যবহার বন্ধ করে দেয়।
ফেসবুক বন্ধ করার পর হাজার হাজার ব্যবহারকারী টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে অভ্যুত্থানবিরোধী হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১০টা থেকে দেশটিতে এই দুই জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সামরিক শাসকদের পক্ষ থেকে এ নিয়ে একটি শব্দও বলা না হলেও বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, তাদের হাতে মন্ত্রণালয়ের এমন এক নথি এসেছে যেখানে এই দুই সামাজিক মাধ্যমের দ্বারা ‘জনগণের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে’ বলে দাবি করা হয়েছে।
নরওয়েভিত্তিক টেলিকম কোম্পানি টেলিনর এ নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টুইটার কর্তৃপক্ষ বলেছে, এতে করে ‘জনসাধারণের মধ্যে আলোচনা ও নিজের অবস্থান জানাতে সোচ্চার মানুষের মতামত প্রকাশের অধিকার’ ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এএস