ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্নাটকে সম্প্রতি শুরু হওয়া হিজাব বিতর্ক ও তা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী বেঙ্গালুরুর স্কুল কলেজে ২ সপ্তাহের জন্য প্রতিবাদ-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য পুলিশ।

বেঙ্গালুরু পুলিশের বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহ রাজধানীর প্রত্যেক স্কুল-কলেজের ২০০ মিটারের মধ্যে কোনো বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সমাবেশ হলে আইনি ব্যবস্থা নেবে পুলিশ প্রশাসন।

গত মাসে কর্নাটকের উদুপি জেলার একটি প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের ছয় ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে ক্লাসে ঢুকতে বাধা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে এই সমস্যার সূত্রপাত ঘটে। রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীল তিনটি জেলার একটি উদুপি; যা দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) অন্যতম শক্ত ঘাঁটি।

শ্রেনীকক্ষে হিজাব পরে ক্লাস করা যাবে কি না— তা নিয়ে ওই কলেজ কর্তৃপক্ষ ও মুসলিম নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিবাদ চলে, এর মধ্যেই উদুপির ওই কলেজের ছয় শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষের বাইরে বসে থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় রাজ্যজুড়ে দানা বাঁধতে থাকে বিক্ষোভ।

অল্প সময়ের মধ্যে রাজ্যের অন্যান্য কিছু কলেজে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া শাল পরে ক্লাসে আসতে শুরু করে। উভয় পোশাকই ক্যাম্পাসে পরা যাবে না, এমন নির্দেশনা জারি করতে বাধ্য হন কলেজ কর্মকর্তারা।

গত সপ্তাহে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হিজাব পরা একদল ছাত্রীকে কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। উদুপি জেলার কুন্দাপুরের একটি প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এই ঘটনায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

একপর্যায়ে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। উদুপি সরকারি কলেজের ৫ জন নারী কর্নাটক হাইকোর্টে শ্রেণীকক্ষে হিজাব নিষিদ্ধের বিপক্ষে পিটিশন দায়ের করেন।

কিন্তু মঙ্গলবার আদালতে পিটিশনের শুনানি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই, বেঙ্গালুরুসহ রাজ্যের বেশ ‍কিছু শহরে পাল্টপাল্টি বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন হিন্দু ও মুসলিম শিক্ষার্থীরা। কিছু সমাবেশে হিন্দু এবং মুসলিম শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাথর নিক্ষেপ এমনকি অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।

এসএমডব্লিউ