ছবি: এনডিটিভি

শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করেছে মার্কিন অস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানি ডব্লিউইই ১। আধা স্বয়ংক্রিয় (সেমি অটোমেটিক) বন্দুক এআর-১৫ আদলে তৈরি করা এই আগ্নেয়াস্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে জেআর-১৫।

ডব্লিউইই ১— এর ওয়েবসাইটে জেআর-১৫ সম্পর্কে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা থেকে জানা গেছে— এই বন্দুকটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৩১ ইঞ্চি, ওজন ২ দশমিক ৫ পাউন্ড (১ কেজি)। এই বন্দুকটির ম্যাগাজিনে সর্বোচ্চ ১০ টি ২২ ক্যালিবারের বুলেট রাখা সম্ভব।

অভিভাবকরা যেন ‘আনন্দের সঙ্গে’ ও ‘নিরাপদভাবে’ তাদের শিশু সন্তানদের অস্ত্র চালনা শেখাতে পারেন, সেজন্যই এই বন্দুক তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে নিজেদের ওয়েবসাইটে কোম্পানির কর্মকর্তারা বলেন, ‘এটি আকার আকৃতি, অনুভব ও পরিচালনা খুবই কোমল। একদম মা-বাবার স্নেহের মতো।’

শিগগিরই এই বন্দুক বাজারে ছাড়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ডব্লিউইই ১— এর ওয়েবসাইটে।

এদিকে, ওয়েবসাইটে এই বন্দুকের ছবি ও তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর কোম্পনির বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা চলছে যুক্তরাষ্ট্রে। মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভায়োলেন্স পলিসি সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক জশ সুগারমান বার্তাসংস্থা এএফপিকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘ওয়েবসাইটে প্রথম যখন আমি এই বন্দুকের ছবি ও বিবরণ পরলাম তখন আমি এটাকে একটি উদ্ভট কৌতুক মনে করেছিলাম।’

‘পরে আমি বুঝতে পারলাম—এটি কোনো কৌতুক নয়, তবে নিঃসন্দেহে উদ্ভট।’

আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালানো অপর মার্কিন সংস্থাগুলোর জোট নিউটন অ্যাকশন অ্যালায়েন্স ও ডব্লিউইই ১ কোম্পনির বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে এই বন্দুকের বিপণন ও বাজারজাতকরণ বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমর্ধমান সামাজিক সংঘাত বৃদ্ধির অন্যতম কারণ আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতা। টাকা থাকলে দেশটিতে যে কেউ খুব সহজেই আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এআর-১৫ বন্দুক, যার আদলে তৈরি হয়েছে জেআর-১৫। সম্প্রতি দেশটিতে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু বড় হত্যাকাণ্ডে এই অস্ত্রটি ব্যবাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার সীমিত রাখার পক্ষে প্রস্তাব উত্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু অস্ত্র কোম্পনির সুবিধাভোগী আইনপ্রণেতাদের কারণে শেষপর্যন্ত সেসব প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি।

সূত্র: এএফপি

এসএমডব্লিউ