বগুড়ায় মারপিট ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা একটি মামলায় ‘ভুয়া আগাম জামিন’ আদেশ তৈরির ঘটনায় যুবলীগের সহসভাপতি মো. আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (১১ মে) বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের ছয়মাসের জামিন মঞ্জুর করেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিনহাদুজ্জামান লিটন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।

এর আগে এই আসামিদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের জাল আদেশ দাখিল করে বগুড়ার আদালত থেকে জামিন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় হাইকোর্ট গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে যুবলীগের সহসভাপতি (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) ও কাউন্সিলর মো. আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এই আদেশ বাস্তবায়ন করে সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বগুড়ার মুখ্য বিচারিক হাকিমকে বিষয়টি তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। হাইকোর্টের এ আদেশের পর গত ৩ মার্চ ১৪ জন এবং ৪ মার্চ ১৬ জন বগুড়ার আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আইনজীবী মিনহাদুজ্জামান লিটন আদালতে বলেন, ওই জামিন জালিয়াতির ঘটনা সিআইডি তদন্ত করেছে। তাতে এ আসামিদের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাদের পক্ষে এর আগে যে আইনজীবী নিয়োজিত ছিলেন তিনি ও কয়েকজন কর্মচারী ওই ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়ায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের ছোটভাই মশিউল আলম বাদী হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি বগুড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় যুবলীগের সহসভাপতি মো. আমিনুল ইসলামসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে আমিনুল ইসলামসহ ৩০ জনের জামিন নেওয়ার একটি আদেশনামা (জামিন আদেশ) তৈরি করা হয়।

আদেশনামায় দেখানো হয়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে আসামিদের ৬ সপ্তাহের জামিন দেওয়া হয়েছে। এই জামিন শেষে তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই ভুয়া আদেশের তথ্য সংশ্লিষ্ট আদালতের নজরে আসে। এরপর এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানান। এরপর আদালত আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এমএইচডি/এসকেডি