বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ের সংগৃহীত ছবি

কেরানীগঞ্জের ৩০টি ওয়াশিং প্লান্টসহ বুড়িগঙ্গার পানি দূষণে দায়ী ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও কারখানার বিরুদ্ধে মামলা করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকের প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রোববার (০৩ জানুয়ারি) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ওয়াশিং প্লান্টগুলো হচ্ছে- আহামদ হোসেন ওয়াশিং, আমেনা ওয়াশিং, সানমুন ওয়াশিং, ইডেন ওয়াশিং, বিসমিল্লাহ ওয়াশিং, লোটাস ওয়াশিং, গ্লোবাল ওয়াশিং, রুবেল ওয়াশিং, আনুষ্কা ওয়াশিং, সততা ওয়াশিং, চঞ্জল ওয়াশিং, আব্দুর রব ওয়াশিং, ঢাকা ওয়াশিং, আজান ওয়াশিং, নিউ সাহারা ওয়াশিং, দোহার ওয়াশিং, রিলেটিভ ওয়াশিং, নিউনাশা ওয়াশিং, ইউনিক ওয়াশিং, মৌ ওয়াশিং, সেতু ওয়াশিং, কোয়ালিটি ওয়াশিং, জুয়েনা ওয়াশিং, কামাল ওয়াশিং, ওয়াটার কালার ওয়াশিং, পারজোয়ার ওয়াশিং, জিএম ওয়াশিং, কুমিল্লা ওয়াশিং, আছিয়া ওয়াশিং ও লিলি ওয়াশিং। 

একইসঙ্গে কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গার পানিতে বা তীরে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেন ময়লা-আবর্জনা ফেলতে না পারে, সে বিষয়ে তদারকির ব্যবস্থা করতে ঢাকার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কেরানীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হোসেন।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, বুড়িগঙ্গার দূষণ ঠেকাতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর অবৈধ বা বুড়িগঙ্গা দূষণকারী কারখানা বন্ধ করে দেয়। দুই-দুইবার কারখানাগুলো বন্ধ করা হলেও আবার চালু করা হয়েছে। ফলে আগের মতোই দূষণের শিকার হচ্ছে বুড়িগঙ্গার পানি। কিন্তু পরিবেশ আইন অনুযায়ী দূষণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার বিধান থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করেনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

আইনজীবী আরও বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের দাখিল করা প্রতিবেদন থেকে দেখা যায় যে, ৩০টি ওয়াশিং প্লান্ট রয়েছে সেখানে। সেগুলো মারাত্মক পানি দূষণ করছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। নয়তো দূষণ বন্ধ হবে না। এমন আরজি জানালে আদালত এই ৩০টি ওয়াশিং প্লান্টসহ যেসব ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কারখানা বুড়িগঙ্গা দূষণের জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে এইচআরপিবির পক্ষে ২০১০ সালে একটি রিট করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ১ জুন তিন দফা নির্দেশনাসহ রায় দেয় হাইকোর্ট। 

এর মধ্যে বুড়িগঙ্গায় বর্জ্য ফেলা বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে এবং বুড়িগঙ্গা নদীতে সংযুক্ত সব পয়ঃপ্রণালীর লাইন (সুয়ারেজ) ও শিল্পকারখানার বর্জ্য নিঃসরণের লাইন ছয় মাসের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশনা ছিল।

ওইসব নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল সম্পূরক আবেদন করে এইচআরপিবি।

এমএইচডি/জেডএস