বিয়ের আয়োজন করতে গত ২২ অক্টোবর রাজশাহী কারাগারের তত্বাবধায়কের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়

১৪ বছর বয়সী কিশোরী খালাতো বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দৈহিক মেলামেশার পর তাকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ মামলার আসামি হয়ে গ্রেফতার হওয়া রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার দিলীপ খালকোকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকার সময় আদালতের নির্দেশে গত ৫ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের সম্মতিতে ওই কিশোরীকে বিয়ে করার পর জামিন পেলেন তিনি। রাজশাহীর কারাফটকে এ বিয়ে হয়। এর আগে ধর্ষককে বিয়ে করতে চেয়ে তার জামিন চান স্বয়ং ভুক্তভোগী। পরে তাদের বিয়ে আয়োজনের নির্দেশ দেন আদালত।
 
বিয়ের আয়োজন করতে গত ২২ অক্টোবর রাজশাহী কারাগারের তত্বাবধায়কের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিয়ের পর ওই বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। আদালতের আদেশ মোতাবেক বিয়ের বিষয়টি অবহিত করে জামিন আবেদন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) আদালত দিলীপ খালকোকে এক বছরের জামিন দিলেন। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী দিলীপ খালকোর খালাতো বোন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তখন মেয়েটির বয়স মাত্র ১৪ বছর। বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে তাদের দৈহিক সম্পর্ক হয়। এতে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে।

কিন্তু দিলীপ খালকো আর বিয়ে করতে রাজি হননি। এ নিয়ে সে সময় সালিশের নামে সময়ক্ষেপণ করা হয়। পরে ঘটনা গড়ায় আদালতে। ওই বছরের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় দিলীপের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করে মেয়েটি।

মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন করা হয়। ওই বছরের ১২ জুন দিলীপ খালকোকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।

২০১২ সালের রায়ের পর থেকেই দিলীপ কারাবন্দী ছিলেন। এ অবস্থায় উভয় পক্ষের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কারাফটকে বিয়ের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ভুক্তভোগীকে বিয়ে করায় দিলীপকে এক বছরের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আসামি কারাগার থেকে বের হয়ে জামিনের অপব্যবহার করলে তার জামিন বাতিল হয়ে যাবে বলেও আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।  

এমএইচডি/এনএফ