র‌্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই) গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তা। এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মোট আসামি ১৭ জন। অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে, সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনসহ সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২১ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এ মামলায় সুনির্দিষ্ট চারটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। সব অভিযোগ উপস্থিত আসামিদের পড়ে শোনান বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। অভিযোগ পড়া শেষে কাঠগড়ায় থাকা ১০ সেনা কর্মকর্তাকে নিজেদের অপরাধের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। তাদের উদ্দেশ্যে বিচারক বলেন, আপনারা অপরাধ স্বীকার করবেন কিনা?

বিচারকের এমন প্রশ্নে প্রত্যেকে দাড়িয়ে না সূচক জবাব দেন। একপর্যায়ে এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা নিরপরাধ। আমাদের কোনো দোষ নেই। এ আদালতের মাধ্যমে আমরা ইনসাফ পাব বলে দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে।’

তাদের কথা শেষে ধন্যবাদ জানিয়ে চেয়ারে বসতে বলেন মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এছাড়া অভিযোগের ভিত্তি থাকায় প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করা হয়।

এদিন সকালে ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন- র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

হাসিনা-কামাল ছাড়া পলাতক অন্যরা হলেন- শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন, র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও র‌্যাবের সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. খায়রুল ইসলাম।

এমআরআর/এমজে