ইনুর মামলা
ট্রাইব্যুনালে বাবা হত্যার বিচার চাইলেন ছেলে
চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে কুষ্টিয়ায় ছয় হত্যা, উসকানি, ষড়যন্ত্রসহ সুনির্দিষ্ট আট অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে এসে বাবা হত্যার বিচার চেয়েছেন ছেলে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ বিচার প্রার্থনা করেন তিনি। প্যানেলের অন্য সদস্য জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
বিজ্ঞাপন
এ মামলায় সাত নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন এই যুবক। নিরাপত্তার স্বার্থে তার নামপরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন তার বাবা।
জবানবন্দিতে সাক্ষী বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আন্দোলনে আমার বাবাসহ এলাকার অনেকেই অংশ নেন। ওই সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বামপন্থী অন্যান্য দলের নেতাকাদের উসকানি ও নির্দেশে কুষ্টিয়ার সাবেক এসপি পলাশ কান্ত রায় ও এসআই সাহেব আলীর বাহিনী মিলে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালান। এতে আমার বাবাসহ ছয়জন হত্যার শিকার হন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর আমাকে একজন লোক ফোন করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে যেতে বলেন। হাসপাতালে গিয়ে বাবার গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখি৷ পরে লাশটি নিজ বাড়িতে নিয়ে আসি। ওই দিনে একই এলাকায় তিনজন শহীদ হন। তিনজনেরই একসঙ্গে জানাজা হয়। ট্রাইব্যুনালের কাছে আমার বাবা হত্যার বিচার চাই।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে জেরার জন্য সময় চান ইনুর আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। পরে আগামী ৬ জানুয়ারি দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার ও সহিদুল ইসলাম।
এদিন সকালে কারাগার থেকে ইনুকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে রয়েছেন সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি। গত ২ নভেম্বর ইনুর বিরুদ্ধে আনা আটটি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো হয়। তাদের গুলিতে শহীদ হন শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন, উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী ও চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ। আহত হন বহু নিরীহ মানুষ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইনুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়। পরে তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ এনে ফরমাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) জমা দেয় প্রসিকিউশন।
এমআরআর/এমজে