আবু বকর সিদ্দিকী

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে অবসরে গেলেন বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) ছিল তার শেষ কর্মদিবস। বিদায় উপলক্ষে এদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং পরে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা জানানো হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতিও ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর বিদায়ের ফলে এখন আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতিসহ পাঁচ বিচারপতি বিচারিক কাজ পরিচালনা করবেন।

বিদায়ী বক্তব্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিতদের উদ্দেশে বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, আসুন, একটি সুস্থ, সরল, স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক বিচার বিভাগের অবকাঠামো আমরা রচনা করে যাই। আজ আমার বিচারিক জীবনের ইতি টানছি। এ মুহূর্তে একটি দাবি রেখে যেতে চাই, বিচারপ্রার্থীদের এ স্বর্গীয় আশ্রয়স্থল বিচারালয় কোনো অবস্থাতেই যেন বাণিজ্যালয় হিসেবে যাতে পরিণত না হয়। এটি বার ও বেঞ্চের উভয়কে শক্তভাবে রুখে দিতে হবে। ৪১ বছরের দীর্ঘ এ বিচারিক জীবনে কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি তার বিচারের ভার আপনাদের ওপর ন্যস্ত।

তিনি বলেন, শেষ সময়ে বলে যেতে চাই- আইনের শাসন ছাড়া কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা চলছে। এ অগ্রযাত্রার সফল অংশীদার হবে বিচার বিভাগ।

স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, গত ৪২ বছরে আমার স্ত্রী অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তার ত্যাগের ফলে আমার এ বিচারিক জীবন অনেকটাই সুন্দর ছিল। সন্তানরা আমার বিচারিক জীবনে অনেক ত্যাগ করেছে। জনগণের জন্য কাজ করতে আমাকে অনেক উৎসাহিত করেছে। একইসঙ্গে তার ভাই বিচাপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর দায়িত্ব পালনের কথাও স্মরণ করেন তিনি।

বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকীর পিতার নাম মরহুম আব্দুল গফুর মোল্লা, মা-নুর জাহান বেগম। জন্ম ১৯৫৪ সালের ২৯ জুলাই। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথমে বিএসসি করেন। পরে এলএলবি সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়ার বারে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৮০ সালের ২৩ এপ্রিল তিনি মুনসেফ হিসেবে বিচারিক জীবন শুরু করেন। পরে ১৯৯৭ সালে জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।

২০০৯ সালের ৩০ জুন তিনি হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১১ সালে স্থায়ী হন। হাইকোর্টে দীর্ঘ ৯ বছর বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।   

এমএইচডি/আরএইচ