প্রথম আলোর সাময়িকী ‘কিশোর আলোর’ বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঢাকা রে‌সি‌ডে‌ন্সিয়াল মডেল ক‌লে‌জের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। ঢাকা রে‌সি‌ডে‌ন্সিয়াল মডেল ক‌লে‌জের পক্ষে অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার কাজী শামীম ফরহাদ এ রিট আবেদন করেন। রিটে ৫০ কোটি টাকা কলেজটির জন্য এবং বাকি ৫০ কোটি টাকা নাইমুল আবরারের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে চাওয়া হয়েছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনটি স্ট্যান্ডওভার (মূলতবি) রেখেছেন।

শনিবার (১৭ জুলাই) রিট আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারীর আইনজীবী এস এম আব্দুর রউফ। তিনি জানান, ওই ঘটনায় কলেজের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোর সঙ্গে অনুষ্ঠানের যে চুক্তি করে তাতে কার কি দায়দায়িত্ব তা উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার দায়িত্ব ছিল প্রথম আলোর আয়োজকদের। এ কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ৫০ কোটি এবং আবরারের পরিবারকে ৫০ কোটি টাকা দিতে এ রিট করা হয়েছে।  

তবে আদালত আবরারের পরিবারকে রিট আবেদনে আবেদনকারী করতে বলেছেন। নিয়মিত আদালত খোলার পর আবেদন সংশোধন করে কলেজের পাশাপাশি আবরারের বাবাকেও আবেদনকারী করা হবে। এরপর শুনানির জন্য রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হবে।  

২০১৯ সালের ১ ন‌ভেম্বর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নাইমুল আবরার রাহাত নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওইদিন বিকেলে বিদ্যুতায়িত হওয়ার পর আবরারকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর একই বছরের ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরা‌রের বাবা ম‌জিবুর রহমান দৈ‌নিক প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক এবং কি‌শোর আলোর প্রকাশক ম‌তিউর রহমা‌নের বিরু‌দ্ধে মামলা করেন। 

গত বছরের ১২ নভেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ ওই ঘটনায় করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। 

যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেওয়া হয় তারা হলেন- মতিউর রহমান, কবির বকুল, শুভাশিষ প্রামাণিক শুভ, মুহিতুল আলম পাভেল, শাহ পুরান তুষার, জসিম উদ্দিন তপু, মোশারফ হোসেন, মো. সুমন ও কামরুল হওলাদার। আসামিদের সবাই জামিনে রয়েছেন। তবে অপর আসামি কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এরপরে অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন মতিউর রহমান। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট।

এমএইচডি/জেডএস