রাজধানী পল্লবী থানার সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের দুই সদস্যের ফের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আব্দুল্লাহ আল মামুন ও কাউসার হোসেন।

রোববার (১৮ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আদালতের পল্লবী থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, পল্লবী থানার সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলায় দুই জঙ্গিকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে ফের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের উপ-পরিদর্শক গোলাম মোর্তজা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক আসামিদ্বয়ের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ১২ জুলাই এ দুই আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

গত ১১ জুলাই রাতে নারায়ণগঞ্জে দুটি পৃথক আস্তানায় অভিযান চালায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। সেখান থেকে তিনটি শক্তিশালী আইইডি এবং বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। একইদিন বিকেলে যাত্রাবাড়ী থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডেভিড কিলার এবং রাতে কেরানীগঞ্জ থেকে কাউসার হোসেন ওরফে মেজর ওসামাকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি।

এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত ১৭ মে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড সংলগ্ন পুলিশ বক্সে বোমা ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। পরবর্তীতে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। এই বোমার তদন্ত করতে গিয়ে রোববার (১১ জুলাই) বিকেল ও রাতে দুজনকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও বন্দর থানায় অভিযান চালিয়ে আইইডি ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয় এবং তিনটি আইইডি নিষ্ক্রিয় করা হয়। গ্রেফতার হওয়া দুজন বোমা তৈরির কারিগর। দুজনই জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকলেও তারা স্লিপার সেল হিসেবে আমিরের অধীনে কাজ করছিল।

তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে যে বোমাটি রাখা হয়েছিল সেটি আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডেভিড কিলারের আস্তানায় তৈরি করা। পরবর্তীতে তার এক সহযোগীর মাধ্যমে বোমাটি নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। মো. কাউসার হোসেন ওরফে মেজর ওসামা জানায়, সে দীর্ঘদিন থেকে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সে সংগঠনের সামরিক শাখার অন্য সদস্যদের সঙ্গে অনলাইনে ও অফলাইনে যোগাযোগ রক্ষা করে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিত। বাংলাদেশের নব্য জেএমবির আমির মাহাদী হাসান ওরফে আবু আব্বাস আল বাঙ্গালির সঙ্গে সে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত।
 
গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সিটিটিসি প্রধান বলেন, আপনারা জানেন ঈদের পর পর গত ১৭ মে তারা পুলিশ বক্সে বোমা রেখে এসেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল এ ধরনের বিস্ফোরকের মাধ্যমে সেখানে হামলা করা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল তাদের অন্যতম টার্গেট।

গ্রেফতার দুই জঙ্গি ভিন্ন গ্রুপের। তাদের মধ্যে কোনো যোগসাজশ ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতার জঙ্গিরা স্লিপার সেল হিসেবে কাজ করে আসছিল। তারা তথাকথিত আমিরের নির্দেশে কাজ করত। তাদের মধ্যে আপাতত কোনো যোগসাজশ আমরা লক্ষ্য করিনি। তবে আমাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে।

টিএইচ/আরএইচ