বিইআরসি বিরোধ নিষ্পত্তি প্রবিধানমালা বাতিলের বিপক্ষে বিশেষজ্ঞরা
ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ (বাঁয়ে) ও ড. সেলিম মাহমুদ
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিরোধ নিষ্পত্তি প্রবিধানমালা ২০১৪ বাতিলের বিপক্ষে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ট্রাইব্যুনাল আইন বাতিল হলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিরোধ নিষ্পত্তিতে নতুন সংকট তৈরি করবে। এ আইন বাতিল করে কমিশন সব ক্ষমতা নিজের হাতে নিতে চায় বলেও মনে করেন তারা।
বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ক আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ক প্রবিধানমালা ২০১৪ বাতিলের সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে দাবি করেন।
বিজ্ঞাপন
ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ বলেন, ‘এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩ এর ৪০ ধারা অনুযায়ী যেকোনো ডিসপুট লাইসেন্সধারীদের নিজেদের মধ্যে অথবা লাইসেন্সধারী ও ভোক্তাদের মধ্যে যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কমিশন বরাবর প্রেরিত হবে। এ আইনের ৪০(৩) ধারা অনুযায়ী, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পদ্ধতি এবং কার্যবিধি দ্বারা নির্ধারিত হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিরোধ নিষ্পত্তি প্রবিধানমালা ২০১৪ প্রণীত হয়। ২০১৪ সালের প্রবিধানমালায় আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনাল গঠন, সালিশকারীদের যোগ্যতা ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ বিধান সন্নিবেশিত ছিল। উক্ত প্রবিধানমালার অধীনে অনেক বিরোধ সফলতার সঙ্গে নিষ্পত্তি হয়।’
তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের এই প্রবিধানমালায় কোনো অসামঞ্জস্য না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ডিসপুট সেটেলমেন্ট রেজুলেশন ২০২১ প্রণয়নের মাধ্যমে ২০১৪ সালের প্রবিধানমালা বাতিল করে। ২০২১ সালে প্রণীত প্রবিধানমালার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সালিশকারী হিসেবে প্যানেলভুক্তির যোগ্যতা এককভাবে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত হওয়াসহ অন্যান্য অনেক বিষয়ে ২০২১ সালের প্রবিধানমালার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এখানে সব ক্ষমতা কমিশনের হাতে রেখে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিরোধ নিষ্পত্তি জটিলতায় পড়বে।’
বিজ্ঞাপন
এদিকে ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, ‘এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিরোধ নিষ্পত্তি প্রবিধানমালা ২০১৪ বাতিল হলে বিরোধ নিষ্পত্তিতে নতুন সংকট তৈরি হবে।’ ট্রাইব্যুনাল বাতিল হলে জ্বালানি খাতের বিরোধ নিষ্পত্তিতে স্থবিরতা আসবে এবং এই উদ্যোগ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি বাতিলের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিদ্যমান নানা পক্ষ-বিপক্ষের বিরোধ নিষ্পত্তি আরও জটিল হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে যেসব বিরোধ নিষ্পত্তি এখন প্রক্রিয়াধীন আছে, সেগুলো সমাধানের পথটাও আটকে যাবে।’
সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত গোপন রেখে লেজিসলেটিভ বিভাগ থেকে এনওসি নিয়ে কমিশন এসআরও জারি করেছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সরকারের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’
এমএইচডি/এসকেডি