দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান/ ফাইল ছবি

হাইকোর্টে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেছেন, ‘ক্যাসিনো খেলা অনেকটা বিলিয়ার্ডের মতো। এই ক্যাসিনো খেলে কেউ হয়েছেন বাদশা, আবার কেউ পথের ফকির।’

ক্যাসিনোর বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে তিনি এ কথা বলেন।

আদালত ক্যাসিনোর অর্থ লন্ডারিং করা অপরাধ কি না- সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা চান। একইসঙ্গে জুয়া খেলা সংক্রান্ত আইন ও উচ্চ আদালতের ঘোষিত রায়ও উপস্থাপন করতে আদেশ দেন।

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার এক আসামির জামিন শুনানিতে এ বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হলে দুদকের কাছে আইনি ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ‘আমরা যদি এই মামলায় একটা সিদ্ধান্ত দিতে পারি, তাহলে তা অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে অনুসরণ করা যাবে।’

২০১৯ সালে দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন বাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই গ্রেপ্তারের তালিকায় রয়েছেন- ঢাকার ওয়ান্ডার্স ক্লাবের সেক্রেটারি জয় গোপাল সরকার।

তার বিরুদ্ধে ক্যাসিনোকাণ্ডে সম্পৃক্ত থেকে অর্থপাচারের অপরাধে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। সূত্রাপুর থানায় করা এক মামলায় আসামি রুপন ভূইয়া ও সাইফুল ইসলামের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জয় গোপালের নাম আসে। 
এরপরই তাকে আসামি করা হয়। তার বিরুদ্ধে করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, জয় গোপাল ওয়ান্ডার্স ক্লাবে অর্থের বিনিময়ে ক্যাসিনো খেলার সুযোগ করে দিয়ে অপরাধে সহায়তা করেছেন। অর্থপাচার একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ। জয় গোপাল সরকারসহ অন্যান্য সকল আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে মতিঝিল ওয়ান্ডার্স ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো খেলা পরিচালনা করার ও এতে সহায়তা করার বিষয়ে তথ্য এবং প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব মামলায় হাইকোর্টে জামিন চান এই আসামি।

শুনানিতে দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘ক্যাসিনো খেলার জন্য তো মামলা হয়নি। মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে অর্থ বেআইনি স্থানান্তরের জন্য। আর ওই অর্থের উৎস হলো ক্যাসিনো। আসামিরা সংঘবদ্ধভাবেই এই অপরাধ সংঘটন করেছে।

জবাবে গোপালের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এসব ক্লাবে যেখানে হাউজি খেলার সুযোগ আছে। সেখানে ক্যাসিনো নতুন আবিষ্কার। ক্যাসিনোও একটা গেম। এটা কোনো অপরাধ নয়, ক্যাসিনো খেলা অপরাধ এটা আইনে কোথায় বলেছে?’ এরপরই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য দুদক আইনজীবীকে বলা হয়।

এমএইচডি/এফআর