কানের ভেতরে চুলকানি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তখন আরাম পেতে অনেকে ব্যবহার করেন কটন বাড। এতে কানের ভেতরে থাকা ময়লা বের হয়ে আসে, মেলে সাময়িক আরামও। তবে গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। আপাতদৃষ্টিতে নিরাপদ মনে হওয়া এই কটন বাডই আপনার শ্রবণশক্তির মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, এমনকি তা চিরতরে নষ্টও করে দিতে পারে। এমনটাই দাবি গবেষকদের।

প্রায় এক বছর আগের এক গবেষণায় মেলে কয়েকটি অবাক করা তথ্য। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় সাত হাজারের মতো মানুষ কটন বাড ব্যবহারের কারণে অসুস্থ হন। কটন বাড ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানেন না। শতকরা মাত্র ৩৬ শতাংশ ব্যবহারকারী এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অবগত। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, এরপরও তারা কান পরিষ্কারের কাজে কটন বাড ব্যবহার করে থাকেন। মার্কিন চিকিত্সক ড. ক্রিস্টোফার চ্যাং এর মতে, নিয়মিত যারা কটন বাড ব্যবহার করেন তাদের কানের এয়ারড্রাম মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কটন বাড ব্যবহারের কারণে কানে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দিতে পারে, এমনকি হতে পারে রক্তপাতও।

যখন কেউ কান চুলকানো বা পরিষ্কারের কাজে কটন বাড ব্যবহার করেন তখন কানের ভেতরে থাকা নরম অস্থিগুলো আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এই অস্থিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে শ্রবণশক্তিও হয়ে পড়ে দুর্বল। কটন বাড ব্যবহারের ফলে শ্রবণশক্তি হারানোর আশঙ্কাও উড়িয়ে দেয়া যায় না।

মার্কিন গবেষকরা বলছেন, কানের ভেতর থেকে ময়লার মতো যে পদার্থ আমরা বের করে আনি তা আসলে উপকারী। কারণ আমাদের কানের ভেতরে তৈরি এই আঠালো পদার্থ ধুলোবালি ও সংক্রমণ থেকে কানকে বাঁচায়। কানের মাধ্যমে জীবাণু যেন আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্যই তৈরি হয় এই আঠালো পদার্থ। ময়লার মতো দেখতে এই পদার্থ বেশি জমে গেলে কানের ভেতর থেকে নিজ থেকেই বের হয়ে আসে। তাই অযথা খোঁচাখুঁচির অভ্যাস এড়িয়ে চলাই উত্তম।

মাঝে মাঝে যদি এমন হয়, কানের ভেতরে খুব বেশি চুলকানি বা অস্বস্তি অনুভব করেন, তবে অবশ্যই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইয়ার ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। এতে উপকার পাবেন। আর কটন বাড? ক্ষতিকর জেনেও এটি ব্যবহার করবেন কি না তা নির্ভর করছে আপনার সচেতনতার ওপর। 

জিনিউজ অবলম্বনে এইচএন/এএ