শিশুর যত্ন নেয়া মোটেই সহজ কোনো বিষয় নয়। কারণ শিশুর বিষয়গুলো বড়দের মতো নয়। পৃথিবীতে আসার পরে সবকিছুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে বেড়ে উঠতে তার অনেকটা সময় লেগে যায়। তাই শিশুর জন্মের পর অন্তত এক বছর পর্যন্ত তার খাবারের বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। অভিভাবককে অবশ্যই জানতে হবে যে শিশুকে কোন খাবার দেয়া যাবে এবং কোন খাবার দেয়া নিষেধ। 

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস মায়ের বুকের দুধ ছাড়া আর কিছুই খাওয়ানো যাবে না। তবে মায়ের বুকের দুধ যদি শিশুর জন্য পর্যাপ্ত না হয় তখন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে খাবার দিতে হবে। ছয় মাস পর শিশুকে অন্যান্য খাবার খাওয়ানো যেতে পারে। তবে কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো শিশুর এক বছর বয়সের আগে কোনোভাবেই দেয়া উচিত নয়। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-

লবণ খেতে দেবেন না

আয়োডিনের অভাব পূরণের সবচেয়ে বড় উৎস হলো লবণ। শিশুর বিকাশের জন্য লবণ বেশ প্রয়োজনীয়। তবে কোনোভাবেই শিশুর এক বছর বয়সের আগে তাকে লবণ খেতে দেবেন না। মায়ের বুকের দুধেই পর্যাপ্ত সোডিয়াম থাকে। তাই শিশুকে আলাদা করে লবণ খাওয়াবেন না। এক বছর বয়সের আগে লবণ খেলে শিশুর উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর, ডিহাইড্রেশন এবং হাড় ক্ষয়ের মতো সমস্যা হতে পারে। তাই শিশুর কাছ থেকে লবণ দূরে রাখুন।

মুখে মধু নয়

অনেকের ধারণাই এমন- শিশুর মুখে মধু দিলে পরবর্তীতে শিশুর মুখের ভাষাও মধুর হবে। তাইতো শিশুকে মধু খাওয়ানোর প্রচলন আছে অনেক জায়গায়ই। কিন্তু এটি নিছকই একটি ধারণা। এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। শিশুর বয়স এক বছর হওয়ার আগে কোনোভাবেই তার মুখে মধু দেবেন না। কারণ মধু খেলে শিশুর শরীরে এক ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। এমনকী এর কারণে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

গরুর দুধ খেতে দেবেন না

গরুর দুধ পুষ্টিকর তাতে সন্দেহ নেই। এর ভেতরে থাকা নানা উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। তবে শিশুর বয়স এক বছর হওয়ার আগে তাকে গরুর দুধ খেতে দেবেন না। এর কারণ হলো গরুর দুধে থাকা খাদ্যগুণ শিশুর শরীর ঠিকভাবে হজম করতে পারে না। তাই এক বছর বয়সের আগে শিশুকে গরুর দুধ খাওয়ালে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

রিফাইন্ড সুগার দূরে রাখুন

প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে রিফাইন্ড সুগার খাওয়ায় বারণ নেই। কিন্তু শিশুর বয়স এক বছর হওয়ার আগে তাকে রিফাইন্ড সুগারযুক্ত কোনোকিছু খেতে দেবেন না। শিশুর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় মিষ্টি সে তার খাবার ও কার্বোহাইড্রেট থেকেই পেয়ে যায়। তাই আলাদা করে তাকে মিষ্টি খেতে দিলে হতে পারে স্থুলতা, দাঁতের ক্ষয়, ডায়াবেটিসের মতো মারাত্মক সমস্যা। শিশুর বয়স এক বছর হওয়ার আগে তাকে ক্যান্ডি, চকোলেট, কোমল পানীয় ইত্যাদি খেতে দেবেন না।