কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা কিছু কবিতা মণিপুরী ভাষায় অনুবাদ করেছেন ভারতের মণিপুর রাজ্যের শিক্ষাবিদ যমুনা লরেইঞ্জাম। ‘নজরুল ইসলাম গি শৈরাং খরা’ শিরোনামের (কবি নজরুলের কিছু কবিতা) বইটিতে বিদ্রোহীসহ ৩০টি কবিতার অনুবাদ রয়েছে। মণিপুর রাজ্যের থোওবাল জেলার ওয়ানজিংয়ের খরিরল সেংলেন এর একটি হলে শুক্রবার (৭ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মণিপুরী ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাডভাইজারি কমিটি ও সাহিত্য একাডেমি নিউ দিল্লির আহ্বায়ক নংমাইথেন কিরণকুমার। বিশেষ অতিথি ছিলেন খরিরল সন্দোকলাপ ওয়ানজিংয়ের সভাপতি তংব্রাম বাবুলাল। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন— মণিপুর সাহিত্য পরিষদ থোওবাল জেলার সভাপতি মোইরাংথেম রাজেন্দ্র, সাহিত্য ও কথালাপ টেন্থ-এর সভাপতি কার্তিক মাইবা এবং নিনগল খুত মণিপুর ওয়ানজিংয়ের সভাপতি খুন্দোগাম গুণমানি।

এসময় যমুনা লরেঞ্জাম বলেন, নজরুলের কবিতা তিনি ছোটবেলায় আসামের স্কুলে পড়েছেন। তখনই নজরুলের সৃষ্টি সমগ্রের প্রতি আকৃষ্ট হন। ১৯৬০ সালে জন্ম আসামের কাছার জেলার চাঁদপুরে। বৈবাহিক সূত্রে যমুনা মুণিপুরের অধিবাসী। সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর নেন। অবসরের পর ফের নজরুলের সাহিত্য পাঠে মনোযোগী হন। এনআরবি নিউজের শতবর্ষে বিদ্রোহী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানতে পারেন বিদ্রোহী কবিতার একশ বছর পূর্ণ হয়েছে। তারপর বিদ্রোহী কবিতাসহ আরও ৩০টি নজরুলের কবিতা বাংলা থেকে মণিপুরী ভাষায় অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন।

কাজী নজরুল ইসলামের সঞ্চিতা কাব্য সংকলনে ৭৮টি কবিতা রয়েছে। তার মধ্য থেকে বিদ্রোহী, পথহারা, অভিশাপ, পিছু ডাক, কবি রাণী, বিজয়িনী, বিদায় বেলায়, দূরের বন্ধু, সন্ধ্যা তারা, আপন পিয়ালী, কান্ডারি হুশিয়ার, সব্যসাচী, গোপন প্রিয়া, অনামিকা, রাজভিখারী, সাম্যবাদী, সর্বহারা, দারিদ্র, ঈশ্বরসহ ৩০টি অনুবাদ করেছেন। যমুনা লরেইঞ্জাম সম্প্রতি বাংলা ভাষা ও নজরুল সাহিত্য চর্চার জন্য এনআরবি নিউজ উনিশে সম্মাননা পেয়েছেন। ১৯৬১ সালের ১৯মে আসামের শিলচরে বাংলা ভাষার জন্য শহীদ ১১ ভাষা সংগ্রামীর স্মরণে এনআরবি নিউজ উনিশে সম্মাননা প্রবর্তন করে। 

ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের একটি মণিপুর। প্রায় ৪০ লাখের বেশি জনসংখ্যার এই রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষ মণিপুরী ভাষায় কথা বলে। তাদের পাঠ্য বই মণিপুরী ভাষায় মুদ্রিত। ১৯৯২ সাল থেকে মণিপুরী ভাষা এই রাজ্যের জাতীয় ভাষা। মণিপুরে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। প্রায় ১০ শতাংশ মুসলিম এবং ১০ শতাংশ বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

এসএসএইচ