ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে হরেক রকমের বই। একাডেমিক বইয়ের বাইরে প্রায় সব ধরনের বই পাওয়া যায় ফুটপাতে। বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করা এসব বই তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হয়। ফুটপাত থেকে সংগ্রহ করা এসব বই দীর্ঘদিন ধরে জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে বইপ্রেমীদের।   

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বাংলাবাজার, পুরানা পল্টন ও নীলক্ষেতের ফুটপাতে এমন দুই শতাধিক বইয়ের দোকান রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার বই কেনাবেচা হয়। দামে কম হওয়ার বইপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এসব অস্থায়ী বইয়ের দোকান। সব বয়সী ক্রেতারাই এসব দোকান থেকে বই সংগ্রহ করেন।

পুরানা পল্টনে ফুটপাতে বই কিনছেন বজলুর রহমান। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেক পুরাতন বই আছে যেগুলো লাইব্রেরিতে পাওয়া যায় না কিন্তু ফুটপাতে পাওয়া যায়। এজন্যই আমরা ফুটপাতে এসে খুঁজি। পছন্দের দুটি বই খুঁজছি, পেলে নিয়ে যাব। 

দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর কয়েকটি বই পছন্দ হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানের। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্দিষ্ট পছন্দের বই লাইব্রেরি থেকে কেনা যায় কিন্তু বই দেখে দেখে খুঁজে কেনা খুব একটা হয়ে ওঠে না। কিন্তু ফুটপাতে অনেক বই আছে যেগুলো আমি কখনো দেখিনি কিংবা নামও শুনিনি। দেখার পরে যদি মনে হয় এ বইটি আমার পড়া দরকার বা পছন্দ হয় তাহলে এখান থেকে কম দামে বইগুলো সহজেই নিতে পারি। বাচ্চাদের জন্য কিছু বই নিয়েছি সুকুমার রায়ের অনেক পুরাতন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কয়েকটি ছোট গল্পের বই নিয়েছি। যেগুলো লাইব্রেরিতে পাওয়া সম্ভব নয়।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব বই বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হয়। অনেকে আবার প্রয়োজন শেষে বিক্রি করে দেন। স্বল্পমূল্যে বইগুলো কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। 

বিক্রেতা বলছেন, আগের চেয়ে বিক্রি অনেকটাই কমেছে। কারণ নতুন বইয়ের পাশাপাশি পুরাতন বইগুলো আমাদের থেকে সংগ্রহ করে অনলাইনে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে আমরা আগের মতো পুরাতন বইগুলো সংগ্রহ করতে পারছি না সংগ্রহ কম থাকায় ক্রেতার সংখ্যাও কিছুটা কমেছে।

পল্টনের বই বিক্রেতা আব্দুল মজিদ বলেন, পড়া শেষে অনেকেই আমাদের কাছে বই বিক্রি করে যায়। কিছু বই আমরা বাংলা বাজার থেকে সংগ্রহ করি। অনেক পুরাতন বই আমাদের কাছে থাকে। পুরানো বইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখন খুব একটা পাওয়া যায় না। যে জায়গা থেকে বই সংগ্রহ করি অনলাইনের যারা ব্যবসা করেন আমাদের চেয়ে অনেক বেশি দাম দিয়ে তারা বই কিনে নিয়ে যায়। এতে আমরা আগের মতো বই সংগ্রহ করতে পারছি না। এ কারণে আমাদের ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে।

নীলক্ষেতের বই বিক্রেতা সিয়াম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়। তবে এখন কিছুটা কম বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন পেশার মানুষ পুরাতন মূল্যবান বইগুলো খোঁজে। যেগুলো খুব কম দামে আমরা বিক্রি করি। আমরাও পুরাতন বইগুলো আমাদের সংগ্রহে রাখার চেষ্টা করি। পুরাতন বইয়ের চাহিদা বেশি থাকায় সবসময়ই ভালো মানের বই পাওয়া যায় না।

এসকেডি