নিলীমা সরকার ও তার চিত্রকর্ম

জার্মানিতে প্রথমবারের মতো কোনো বাঙালি নারী শিল্পী গ্যালারি অনিল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগ থেকে এমএফএ করা নিলীমা সরকার পেয়েছেন এই অ্যাওয়ার্ড।

পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন প্রাইজমানি, ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট আর ২০২২ সালের মে মাসে জার্মানিতে দুই সপ্তাহের জন্য একক চিত্র প্রদর্শনীর সুযোগ। 

২০২১ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১০০ জন শিল্পী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী সেরা ১০ জন প্রতিযোগীকে বাছাই করা হয়। তার মধ্য থেকে চূড়ান্ত বাছাইয়ে নিলীমাকে নির্বাচিত করা হয়। 

শিল্পী নিলীমা সরকারের তুলিতে ফুটে উঠেছে প্রকৃতি ও মানুষের নিবিড় সম্পর্ক, বিশ্ব জলবায়ু সংকট এবং পরিবেশ দূষণের মুখে প্রকৃতি। চিত্রশিল্পের মাধ্যমে সচেতনতার এই বার্তা সকলের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াস করে দিয়েছে গ্যালারি অনিল অ্যাওয়ার্ড। 

এই প্রসঙ্গে অ্যাওয়ার্ডের আয়োজক জার্মান প্রবাসী বাঙালি শিল্পী অনিল হোসেন বলেন, ২০০৩ সালে আমি আর আমার স্ত্রী শিল্পী নীহারিকা হোসেন জার্মানিতে একটি আর্ট গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করি। বিভিন্ন দেশের চিত্রশিল্পীরা এই গ্যালারিতে প্রদর্শনী করেন। প্রতি বছর এই গ্যালারি থেকে বেশ কিছু প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তার মধ্যে ‘গ্যালারি অনিল এ্যাওয়ার্ড’ অন্যতম। এতে বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণায় জার্মানির আন্তর্জাতিক ‘গ্যালারি অনিল এ্যাওয়ার্ড ২০২১’-এর জুরি কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অসামান্য শিল্পকর্মের জন্য নিলীমা সরকারকে প্রথম পুরস্কার প্রদান করার। বাঙালি শিল্পী নিলীমা সরকারের ছবি আঁকা, ভাবনা, বিষয়বস্তু বেশ উচ্চমানের।

তিনি আরও বলেন, বাকি ৯ জন প্রতিযোগী আগামী ২০২২ সালে এপ্রিল মাসে গ্যালারি অনিলে যৌথ চিত্রপ্রদর্শনীর সুযোগ পাচ্ছে। এই প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক শিল্পীর কাজই দুর্দান্ত। সব শিল্পীরা চেষ্টা করেছেন ব্যতিক্রমধর্মী বিষয় নিয়ে কাজ করার।

নিলীমা সরকারের আঁকা ছবিতে প্রকৃতি এবং মানুষের যে নিবিড় সম্পর্ক আছে তা সুন্দরভাবে প্রকাশ পায়। পুরস্কার প্রাপ্তি প্রসঙ্গে শিল্পী নিলীমা সরকার বলেন, আমি অনেক বেশি আবেগাপ্লুত। বাঙালি হিসেবে ইউরোপের মাটিতে এত বড় সম্মান আমার কাজে অনেক বেশি অনুপ্রেরণা যোগাবে। 

তিনি বলেন, ছবি সম্পর্কে বলতে গেলে, আমি প্রকৃতি খুব ভালোবাসি। ব্যস্ত জীবন থেকে যতবারই ছবি আঁকতে গিয়েছি ততবারই আমার শিল্পীমন প্রকৃতিকে বিষয় হিসেবে আবিষ্কার করেছে। একটা সময় প্রকৃতির সাথে মানুষের বন্ধুত্ব ছিল। মানুষ প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ছিল। আজ প্রকৃতি মানুষের ওপর নির্ভরশীল। মানুষ চাইলে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারে আবার চাইলে ধ্বংস করতে পারে। পরিবেশের ভালো-মন্দ আমাদের মানবিক কাজের ফলস্বরূপ। নিজেকে ভালো রাখতে হলে প্রকৃতির সংস্পর্শে এসে পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে।  

জয় শিল্পী গোষ্ঠী পরিবার এবং জার্মান শিল্পী দম্পতির পক্ষ থেকে শিল্পী নিলীমা সরকারকে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনায় আন্তরিক অভিনন্দন জানানো হয়েছে। 

এইচকে