আমরণ অনশনের ১১তম দিনে অসুস্থতার সংখ্যা বেড়েছে রেলওয়ে গেটকিপারদের। এখন পর্যন্ত ১৫ জন আশঙ্কাজনক এবং শতাধিক গেটকিপার গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন। রাজধানীর কমলাপুর প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন রেলওয়ে গেটকিপাররা।

বুধবার (৯ মার্চ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান আন্দোলনকারীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের মানউন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের ১ হাজার ৮৮৯ জন গেটকিপারের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরার দাবিতে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে গেটকিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের উদ্যোগে আন্দোলন হচ্ছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের আমরণ অনশন শুরু করেন গেটকিপাররা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আন্দোলনকারীদের মধ্যে ৫৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৫৫৫ জন রেলপোষ্য এবং ৩২৫ জন নারী গেটকিপার রয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পে কর্মরত গেটকিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে চাকরি স্থায়ীকরতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে জরুরিভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু রেলপথ মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বহুবার স্মারকলিপি দিয়েছি, চিঠি দিয়েছি, আমাদের দুর্দশার কথা জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথায় কর্ণপাত করেনি।

আন্দোলনের সমন্বয়কারী মো. আল মামুন বলেন, গত ১১ দিন ধরে কমলাপুরের খোলা আকাশের নিচে গেটকিপাররা অনশন চালিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত রেলপথ মন্ত্রণালয় অথবা বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার কোনো সুর্নিদিষ্ট ঘোষণা আসেনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত গেটকিপাররা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। অনশনের কারণে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে।

তিনি বলেন, নিয়োগের সময় গেটকিপারদের বেতন নির্ধারণ করা হয় সর্বসাকুল্যে ১৪ হাজার ৪৫০ টাকা। বিগত ৫ বছরে বেতন বাড়েনি। বেশিরভাগ গেটকিপার তাদের নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় চাকরি করেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে বাসা ভাড়া, পরিবারের ভরণপোষণ, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। অপরদিকে প্রায় সবার বয়স ৩২ বছর অতিক্রম করায় অন্য চাকরিতেও ঢোকার সুযোগ নেই। আমাদের চাকরির মেয়াদ প্রায় ৫ বছর পার হয়েছে। তাই অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আমাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

এসআর/জেডএস