কৃমি সপ্তাহ শুরু ২০ মার্চ, পাবে ৫-১৬ বছর বয়সীরা
শিশুদের টিকার আওতায় আনতে আগামী ২০ মার্চ (রোববার) থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ। এই সময়ে সপ্তাহব্যাপী দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির মাধ্যমে ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী সব শিশুকে বিনামূল্যে এক ডোজ কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো হবে।
বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে 'জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ' উদযাপন উপলক্ষে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের ৬৪টি জেলাতেই একযোগে এই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিদ্যালয়গামী ও বহির্ভূত ৫-১৬ বছরের প্রায় ৪ কোটি শিশুকে এই ওষুধ খাওয়ানো হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (সরকারি, বেসরকারি, উপানুষ্ঠানিক, কিন্ডার গার্টেন, মাদ্রাসা, মক্তব, এতিম খানাসহ যেখানেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে) এই কার্যক্রম চলবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আগামী ২০ মার্চ কৃমি সপ্তাহ ও ওষুধ খাওয়ানো কর্মসূচি শুরু হবে। এবারের কর্মসূচিতে সারাদেশে ৪ কোটি শিশুকে কৃমির ওষুধ খাওয়ানো হবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্কুলড্রপ ও পথশিশুদের এর আওতায় আনা হবে।
বিজ্ঞাপন
দেশের কৃমি পরিস্থিতি তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, দেশের স্কুল-কলেজগামী প্রায় ৯৮ শতাংশ শিশু কৃমির ওষুধ পায়। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংখ্যার গবেষণায় বাংলাদেশের শতকরা ৮০ শতাংশ শিশুর মলে কৃমি পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে তা প্রায় ৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা।
কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে ক্ষুদে ডাক্তারদের দায়িত্ব
অধিদপ্তর জানিয়েছে, কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে ক্ষুদে ডাক্তাররাও কাজ করবে। এ লক্ষ্যে তাদেরকেও দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।
১. সপ্তাহ শুরুর আগে ফ্লিপচার্ট থেকে নির্ধারিত শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে কৃমির সংক্রমণ, ক্ষতিকর দিক ও প্রতিকার সম্পর্কে বার্তা পড়ে শোনানো।
২. অ্যাসেম্বলি করার সময় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ শুরুর আগাম ঘোষণা দেওয়া এবং স্কুলবহির্ভূত, ঝরে পড়া সমবয়সী শিশুসহ সব ছাত্র-ছাত্রীর ভরা পেটে উপস্থিতির ব্যাপারে উৎসাহিত করা।
৩. কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ শুরুর আগে সব ছাত্র-ছাত্রীর শ্রেণিভিত্তিক তালিকা তৈরি করা।
৪. কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহে কৃমিনাশক ওষুধ সেবনে সক্রিয় অংশগ্রহণ (নাম তালিকা, পানি, কৃমিনাশক বড়িসহ)।
৫. ওষুধ সেবনে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তা শিক্ষকের দৃষ্টিগোচর বা অবহিত করা।
৬. কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ শেষে রিপোর্ট প্রস্তুত করে গাইড শিক্ষকের কাছে হস্তান্তর করা।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার একটি কর্ম পরিকল্পনা হচ্ছে ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম।
২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কৃমি নির্মূলের লক্ষ্যে ৫-১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী ২০ মার্চ থেকে সপ্তাহব্যাপী দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে ২৬তম জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালিত হতে যাচ্ছে।
টিআই/জেডএস