বাইরে যারা খেলছে, খেলতে দেন : পরিকল্পনামন্ত্রী
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরায় বাংলাদেশ বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে পরিকল্পামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাইরে যারা খেলছে, তাদের খেলতে দেন। আপনারা সেদিকে নজর দেবেন না। কর্মকর্তারা দরজা জানালা বন্ধ করে, বাতি জ্বালিয়ে কাজ করে যান। বাইরের বিষয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই। কাজ ফেলে রাখবেন না। দিনের কাজ দিনে করুন। যারা আজ বেতন নিচ্ছেন, তারা অনুগত হয়েই কাজটা করে যান।’
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অনুষ্ঠিত এক ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘টু ডিসকাস অ্যান্ড ভেলিডেট সেক্টর রি ক্লাসিফিকেশন অব এডিপি’ শীর্ষক এ ওয়ার্কশপের আয়োজন করেছে পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ।
বিজ্ঞাপন
সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ একই মর্যাদার। এখানে সুপার মিনিস্ট্রি ও সুপার বিভাগ বলে কিছু নেই। তবে একজন সুপার মন্ত্রী আছেন, তিনি আমাদের দলনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
এম এ মান্নান, মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়
তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কারও ওপর খবরদারি করছে না। কিংবা কোনো মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিতে পারে না। আমরা সবাই মিলে এক সঙ্গে কাজ করে যাব। যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, তা কাজে লাগাতে হবে। দেশ এখন তৈরি আছে। যেসব সমস্যা আছে সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।’
বিজ্ঞাপন
পরিকল্পনা সচিব জয়নুল বারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কশপে বিশেষ অতিথি ছিলেন- পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ, মামুন আল রশিদ, মোছাম্মৎ নাসিমা বেগম, রমেদ্রনাথ বিশ্বাস ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সংস্থার (জাইকা) চিফ রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউহো হায়াকাও।
এম এ মান্নান বলেন, ‘নিষ্প্রাণ প্রশাসন, কোনো প্রশাসনই নয়। প্রশাসনকে হতে হবে অতি চঞ্চল, অতি সুন্দর ও গতিশীল। কর্মকর্তাদের হতে হবে সৃজনশীল। তবে সব কিছুই করতে হবে আইনের মধ্যে থেকে। আমার বেতন কত সেটি নিয়ে মানুষের আগ্রহ নেই। তারা জানতে চায়, এলাকার জন্য কী আনলেন? এলাকায় কয়টা সেতু কালভার্ট করা হলো, এসব দৃশ্যমান কার্যক্রমের প্রতি জনগণের আগ্রহ আছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শামসুল আলম বলেন, ‘সরকার এক, বাজেট এক, কিন্তু সেক্টর ভিন্ন। এটা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ। আমরা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমে চেষ্টা করছি, যাতে সেক্টরগুলোও এক হয়। তা না হলে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।’
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘আমার চাকরি জীবনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত একই সমস্যায় বারবার পড়েছি। সুন্দর এডিপি তৈরির স্বার্থে সেক্টর সংক্রান্ত এই সমস্যার সমাধান জরুরি। প্ল্যানিং কমিশন গঠনের শুরুর দিকে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা সব দেশেই নানা সমস্যা ছিল। সেগুলো ধীরে ধীরে তারা সমাধান করেছে। আমরাও পারব। আমাদের যেসব সমস্যা আছে সেগুলোরও সমাধান করতে পারব।’
ওয়ার্কশপে জানানো হয়, বর্তমানে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে ১৪টি সেক্টরের আওতায় বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়। অপরদিকে, পরিকল্পনা কমিশন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ১৭টি সেক্টরে বরাদ্দ দেয়। এক্ষেত্রে এক ধরনের জটিলতা বিরাজ করছে। এ অবস্থা থেকে বের হতে একই সেক্টর যাতে হয় সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ওয়ার্কশপটির আয়োজন করা হয়েছে।
এসআর/এসএসএইচ/এফআর