তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা কার্যক্রম পরিচালনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি ডিভিশন শতকোটি টাকার কাজ বিনামূল্যে করে দিয়েছে। দায়িত্বের বাইরে দিনরাত কাজ করেও কোনো অতিরিক্ত বিনিময় নেওয়া হয়নি।

বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, করোনা টিকার সফটওয়্যার তৈরি করার জন্য আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে শতশত কোটি টাকা খরচ লেগেছে। ইউরোপ-আমেরিকাতে খোঁজ নিয়ে দেখেন, টিকা নিবন্ধন এবং ব্যবস্থাপনার সফটওয়্যারের জন্য কত মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। কিন্তু আমাদের আইসিটি ডিপার্টমেন্ট এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একসঙ্গে মিলে অ্যাপ তৈরি করেছে। একেবারে বলতে গেলে তারা বিনা পারিশ্রমিকে সরকারি দায়িত্ব ও সময়ের বাইরে দিনরাত পরিশ্রম করে শতকোটি টাকার কাজ করেও কোনো অতিরিক্ত টাকা নেয়নি।

করোনার টিকা নিতে নিবন্ধন বাড়ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টিকা পেতে সুরক্ষা ওয়েবসাইটে এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ১০ লাখ ২৯ হাজার ৪৫৭ জন। নিবন্ধনকারীদের মধ্যে চার লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৯ নারী এবং ৫ লাখ ৯০ হাজার ৪৭৮ জন পুরুষ। এর মধ্যে প্রথম সারির যোদ্ধা ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩৪ জন।

তি বলেন, প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার জন্য নয় লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ জনকে এসএমএস পাঠানো হয়েছে। গত চার দিনে ৩ লাখের বেশি টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে। এই কাজ যদি অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে করাতে হতো তাহলে শতাধিক কোটি টাকা খরচ হতো, এটা আমার দুই মন্ত্রণালয় মিলে করেছে।

পলক বলেন, টিকাদানকারীদের ডাটা এখন সংরক্ষণ করা হচ্ছে, কেউ তথ্য চাইলে চুরি করতে পারবে না, এবিষয়েও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে সেটা হলো কাগজমুক্ত অফিস, ক্যাশলেস লেনদেন অফিস করতে চাই। এই পরিকল্পনা আমরা করে রেখেছি। আমরা যে সুরক্ষা অ্যাপ তৈরি করেছি সেটা বাইরের দেশে করতে গেলে অনেক টাকা লাগতো। তবে আমরা বিনামূল্যে করে দিয়েছি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মীরা ১১ মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তারপরও বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনা সহ্য করে ঠান্ডা মাথায় দেশের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠান আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ও পরিচালক মো. রেজাউল করিম, ডাটা ফর ইমপ্যাক্টের সিনিয়র স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার মুহম্মদ হুমায়ুন কবির, সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. ওনা ভ্যান ম্যানেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নুর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু।

অনুষ্ঠানে ই-এমআইএস কার্যক্রমের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করা হয় এবং চার জেলার মাঠ পর্যায়ের উপ-পরিচালক ও তৃণমূল পর্যায়ে সেবাদানকারীরা ই-এমআইএস কার্যক্রমের ওপর অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

টিআই/জেডএস