পাঁচ টুকরা লাশের পাশে মিলল ‘নিখোঁজ’ নারী
ওয়ারী থানা/ ফাইল ছবি
রাজধানীর ওয়ারীতে পরকীয়ার জেরে সজিব হাসান (৩২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে হত্যার পর মরদেহ পাঁচ টুকরো করে বাথরুমে ফেলে রাখেন শাহনাজ পারভীন (৫০) নামে এক নারী। পরে স্বামীর দেওয়া খবরে ওয়ারী থানা পুলিশ মরদেহের খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে এবং শাহনাজকে আটক করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী জোনের সহকারী কমিশনার মো. হান্নানুল ইসলাম গোলাপ ঢাকা পোস্ট-কে বলেন, ‘গত পাঁচ বছর ধরে ওয়ারীর ১৭/১ কে এম দাশ লেনের ওই বাসায় বসবাস করেন সজিব হাসান। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার শাহনাজ পারভীন কথিত স্ত্রী পরিচয়ে সজীব হাসানের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন। স্থানীয়রা তাকে সজীব হাসানের স্ত্রী হিসেবেই জানতেন।’
বিজ্ঞাপন
গত ৯ ফেব্রুয়ারি জসিম উদ্দিন (৫৫) শাহনাজ পারভীনকে স্ত্রী দাবি করে তার সন্ধান চেয়ে ওয়ারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন (জিডি নং ৪৬৩)। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন যে, তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন অনেকদিন ধরে নিখোঁজ। নিখোঁজের সন্ধানে তদন্ত করছিল ওয়ারী থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে সাধারণ ডায়েরি করা জসিম উদ্দিন ওয়ারী থানা পুলিশকে ফোন করে জানান, তার স্ত্রী শাহনাজ পারভীনকে ওয়ারীর একটি বাসায় আটকে রাখা হয়েছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে ওয়ারী থানা পুলিশ অভিযানে গিয়ে ওয়ারীর ১৭/১ কে এম দাশ লেনের ওই বাসা থেকে পাঁচ টুকরো মরদেহ উদ্ধার করে।
বিজ্ঞাপন
পরে জানা যায়, ওই মরদেহটি সজীব হাসানের। ওই ঘটনায় হাতেনাতে আটক করা হয় শাহনাজ পারভীনকে। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘শাহনাজ পারভীন প্রাথমিকভাবে পুলিশকে জানায় যে, তার সঙ্গে সজীব হাসানের দীর্ঘ পাঁচ বছরের সম্পর্ক। তাদের মধ্যে অবাধ মেলামেশা ছিল। তবে সম্প্রতি সজিব তাকে ব্লাকমেইল করে এবং টাকা দাবি করেন। আজ সকালে বাসায় এলে সজিব শাহনাজকে চাকু দিয়ে হত্যা করতে চান। তখন তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তা প্রতিরোধ করেন এবং ওই ধারালো অস্ত্রে সজিবকে আঘাত করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর হাত, পা ও মাথা পাঁচ টুকরো করে বাথরুমে ফেলে রাখেন।’
নিহত সজিব হাসান রাজধানীর সায়েদাবাদে শ্যামলী বাসের একটি কাউন্টারে কাজ করতেন। এছাড়াও তিনি শাহনাজ পারভীনের বুটিকসের ব্যবসায়ও সহযোগিতা করে আসছিলেন। সজিবের গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে।
এ ঘটনার সাথে আরও কেউ জড়িত আছে এবং নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না- তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক শাহনাজকে পুলিশ হেফাজতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. হান্নানুল ইসলাম গোলাপ।
জেইউ/আরএস