ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী এবং নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই এলাকার সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ব্যবসায়ী-ছাত্রদের মুখোমুখি অবস্থান, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের কারণে আশাপাশের সড়কে থাকা যানবাহন আটকে যাওয়ায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। যা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরো রাজধানীতে প্রভাব ফেলেছে। এ অবস্থায় ‘কার্যত ঢাকা স্থবির’ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগ।
 
ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার সাহেদ আল মাসুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কার্যত আজ ঢাকা স্থবির। কোনো গতি নেই, সব পথ-গলি বন্ধ। ডাইভারশন করে গাড়ি যে ঘুরিয়ে দেবো সে অবস্থাও নেই, পরিস্থিতি নাজুক। আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। কিন্তু কোনোভাবেই কোনো উদ্যোগ বা চেষ্টা কাজে আসছে না। নিউ মার্কেট, সায়েন্সল্যাবে রাস্তা বন্ধ। কাঁটাবনেও ঢাবি ছাত্ররা রাস্তা বন্ধ রেখেছেন। যানজট চলে গেছে আমিনবাজার পর্যন্ত।

যদিও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সকালেই বিভিন্ন সড়কে ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে। সকালে শাহবাগ-এলিফ্যান্ট রোডের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে দুপুর নাগাদ সেটিও বন্ধ করে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। 

সকালে সায়েন্সল্যাব মোড়ে দেখা গেছে, জিগাতলা থেকে সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ৩২ থেকে সায়েন্সল্যাব, গ্রিন রোড থেকে সায়েন্সল্যাব এবং শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব আসার প্রতিটি সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ওই রাস্তায় চলাচল করা প্রতিটি গাড়িকে দীর্ঘ সময় নিয়ে রাস্তা পাড়ি দিতে হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে পপুলার ও ল্যাবএইড হাসপাতালে আসা রোগীরা।

সায়েন্সল্যাব থেকে নীলক্ষেত এবং নীলক্ষেত থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত রাস্তাটি বন্ধ থাকায় নিউমার্কেট ট্রাফিক জোন ডাইভারশনের ব্যবস্থা করেছে। ডাইভারশনে সায়েন্সল্যাব থেকে নীলক্ষেত হয়ে আজিমপুরগামী গাড়িগুলোকে সায়েন্সল্যাব-কাঁটাবন-নিউমার্কেট থানা-পলাশী হয়ে আজিমপুর যেতে হচ্ছে। একইভাবে আজিমপুর থেকে গাড়িগুলোকে বের হতে হচ্ছে।

সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় কথা-কাটাকাটির জেরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী ও দুই ব্যবসায়ী আহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও।

এরপর মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে আবারও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউ মার্কেটের কর্মীরা সংঘর্ষে জড়ান। মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তাদের ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। ছাত্রদের অনেকে হেলমেট পরে হাতে লাঠি নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এতে ৫০ জনের মতো আহত হয়েছেন। মারধর ও হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত ৯ সাংবাদিক। 

জেইউ/জেডএস/জেএস