জলাশয়ে পয়ঃবর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে
অনুষ্ঠানে উপস্থিত এলজিআরডি মন্ত্রীসহ অন্যরা
ঢাকা শহরের পয়ঃবর্জ্য খাল ও লেকে ফেলা বন্ধ করতে ও নিজ শহরকে ভালোবাসতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম।
রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ভালবাসা দিবস একদিন, শহরকে ভালবাসি প্রতিদিন’ প্রতিপাদ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর অধিকাংশ পয়ঃবর্জ্য খালে ও লেকে ফেলা হয়। এটি দ্রুত বন্ধ করতে হবে। এই পয়ঃবর্জ্যের লাইন কীভাবে বন্ধ করা যায়, সে বিষয়ে পরিকল্পনা করার পাশাপাশি একটা টাইমলাইন নির্ধারণ এবং একটি কমিটি গঠন করার ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
তিনি বলেন, শুধু মানুষকে ভালোবাসলে হবে না, আমরা যে শহরে বসবাস করি সে শহরকে ভালোবাসার পাশাপাশি প্রকৃতি ও পরিবেশকে ভালোবাসতে হবে। নিজের আবাসস্থল, চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে শহরের প্রতি ভালোবাসার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুরতে গিয়ে যখন অনেক সুন্দর নগরী দেখি, তখন স্বাভাবিকভাবেই মনে হয়, যদি আমাদের শহরটিও এমন হতো। তাদের শহর সুন্দর শুধু সরকার বা সিটি করপোরেশন করেনি। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছিল বলেই তা সম্ভব হয়েছে। সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকলেই ঢাকা নগরীকে সুন্দর করা সম্ভব।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরকে সুয়ারেজের আওতায় নিয়ে আসতে ৫টি পয়ঃশোধনাগার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে আফতাবনগর সংলগ্ন দাশেরকান্দি প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। এছাড়া অন্যান্য প্রকল্পের কাজ চলমান। এগুলোর কাজ শেষ হলে পুরো ঢাকা শহরের পয়ঃশোধনাগার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
হাতিরঝিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ড্রিম প্রজেক্ট ছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সেখানে স্টেডিয়াম করার প্রস্তাব থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছে অনুযায়ী মানুষের জন্য হাতিরঝিল নির্মাণ করা হয়েছে। রাজধানীতে এরকম আরও অনেক হাতিরঝিল করা সম্ভব।
ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ও খালের দায়িত্ব দুটিই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন রাজধানীতে যেসব লেক আছে, সেগুলো সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের দাবি আসছে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান তিনি।
রাজধানীর উচ্চবিত্ত ও নিম্নআয়ের মানুষের বসবাসের এলাকায় পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য ইউটিলিটির মূল্য সমান হতে পারে না- উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা নগরীতে কোথায় হাইরাইজ বা লোরাইজ বিল্ডিং হবে, কোথায় আবাসিক বা কমার্শিয়াল জোন হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। মানুষের জন্য সড়ক, খেলার মাঠ, ট্রাফিক, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদনের স্থানসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো দরকার। শুধু উঁচু ভবন নির্মাণ করলেই হবে না, সামগ্রিক পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নপূরণ করতে হলে শুধু শহর নয়, সারাদেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে। জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, সাধারণ মানুষসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ সমন্বিতভাবে কাজ করলে পরিবর্তন অবধারিত।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এছাড়া কর্মশালায় রাজউক, ঢাকা ওয়াসা, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান, নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এএসএস/আরএইচ/জেডএস