মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে জনশক্তি রপ্তানি করতে একটি সিন্ডিকেট উঠে-পড়ে লেগেছে বলে দাবি করেছে জনশক্তি রপ্তানিকারক সংগঠন বায়রার সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট। সংগঠনটি বলছে, সুনির্দিষ্ট নাম পেলে সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করবে তারা।

বুধবার (১১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হল রুমে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানি নিয়ে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বায়রার সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট। এ সময় বায়রা সভাপতি ড. মোহাম্মদ ফারুক এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে এ সিন্ডিকেট তাদের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বায়রা নেতারা তাদের এই ষড়যন্ত্র মানবে না। এটি হলে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

যারা সিন্ডিকেট করছে তাদের বিরুদ্ধে বায়রা কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমরা ইতিমধ্যে আদালতের কাছে গিয়েছিলাম। যে ২৫ জন সিন্ডিকেটের কথা বলা হচ্ছে। তাদের নাম সুনির্দিষ্টভাবে আমাদের কাছে নেই। নাম পাওয়া গেলে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয় দেশেই মামলা করব।

তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এমনকি মালয়েশিয়ার সরকারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ কারণেই এখনো সিন্ডিকেট করতে পারেনি। আমরা যদি পদক্ষেপগুলো না নিতাম তাহলে আরও এক বছর আগে সিন্ডিকেট হয়ে যেত।

এ সময় তিনি সিন্ডিকেটের জন্য জনশক্তি রপ্তানিকারক নুর আলী ও রুহুল আমিন স্বপনের দিকে ইঙ্গিত করেন। ফারুক বলেন, এরা স্বঘোষিত সিন্ডিকেট। নিজেই স্বীকার করেছেন সিন্ডিকেট খারাপ এবং ভবিষ্যতে কখনই সিন্ডিকেট করবেন না। সাধারণ সভায় প্রতিজ্ঞা করেছেন আর কখনও সিন্ডিকেট করবেন না। আমরা মনে করি সেই আবার সিন্ডিকেটই করছে। এখনো নামগুলো আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়নি। এখন নামকরা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এর মধ্যে নেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক বলেন, ২০১৬, ১৭ ও ১৮ সালে ১০ জন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি করা হয়। ওই সময় শ্রমিক রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল প্রায় ১৫ লাখ। কিন্তু যেতে পেরেছে মাত্র ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ জন। ১২ লাখ শ্রমিক চাকরির সুযোগ হারিয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো প্রত্যেক শ্রমিকের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা করে নিয়েছে ওই সিন্ডিকেট। যা অনেকেই দিতে না পেরে ভিসা নিতে পারেননি। অথচ সরকার নির্ধারিত ফি ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ১৭০০ থেকে ১৮০০ বৈধ এজেন্সি রয়েছে। যারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি করে আসছে। কেন এবং কি কারণে শত শত এজেন্সিকে বাদ দিয়ে মাত্র ২৫ এজেন্সিকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানির 
অনুমতি দিতে হবে?

এ সময় সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম ও মহাসচিব মোস্তফা মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

এনআই/এসকেডি