আগামী ১৫ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে চলবে মূল শুমারির কাজ। এ লক্ষ্যে মূল শুমারি শুরুর আগে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় শুমারির প্রচারণা চালানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন।

বুধবার (২৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘জনশুমারি ও গৃহ-গণনা ২০২২ এর মাস্টার ট্রেইনারদের চার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায়’ তিনি এ কথা জানান।

প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন বলেন, এবারের শুমারি ডিজিটালি পদ্ধতিতে করতে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব কেনা হয়েছে। এই ট্যাবগুলোর মাধ্যমেই এবারের শুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হবে। জনশুমারি আগে ১০ জুন শুক্রবার ও ১৭ জুন শুক্রবার জুম্মার খুৎবায় প্রচার ও প্রচারণা চালানো হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থানরত সকল বিদেশি নাগরিকের তথ্য নেওয়া হবে।

দিলদার হোসেন বলেন, জুম্মার খুৎবায় জনশুমারির প্রচার করা হবে। খুৎবায় আমরা বলব জনশুমারি আয়োজন, সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন, জনশুমারিতে তথ্য দিন, পরিকল্পিত উন্নয়নে অংশ নিন। এছাড়া সব ধরনের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচার প্রচারণা চালানো হবে। এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থানরত সকল নাগরিকের তথ্য নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানা বেষ্টিত অঞ্চলের সকল গৃহ, সাধারণ, প্রাতিষ্ঠানিক ও বস্তি খানা, ভাসমান-ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী, খানায় বসবাসরত সকল সদস্যের জনতাত্ত্বিক ও আর্থ-সামাজিক তথ্য, যেমন- গৃহের সংখ্যা ও ধরন, বাসস্থানের মালিকানা, খাবার পানির প্রধান উৎস জানা যাবে। টয়লেটের সুবিধা, বিদ্যুৎ সুবিধা, রান্নার জ্বালানির প্রধান উৎস, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, বৈদেশিক রেমিট্যান্স, খানা সদস্যদের বয়স, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, ধর্ম, প্রতিবন্ধিতা, শিক্ষা, কর্ম, প্রশিক্ষণ, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার, ব্যাংক/মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, জাতীয়তা, নিজ জেলা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

দিলদার হোসেন বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। ২য় জনশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮১ সালে। ১০ বছর পর্যাবৃত্তি অনুসরণপূর্বক দেশের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম জনশুমারি ও গৃহগণনা যথাক্রমে ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয়। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পৃথিবীর অন্য অনেক দেশের ন্যায় ৬ষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনায় ১০ বছর পর্যাবৃত্তি অনুসরণপূর্বক ২০২১ সালে পরিচালনা করা সম্ভব না হলেও আগামী ১৫-২১ জুন, ২০২২ সময়ে মূল শুমারির তথ্যসংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।  

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস ‘ট্যাবলেট’ এর মাধ্যমে একযোগে দেশের সকল খানা, গৃহ ও ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করা হবে। মাঠ পর্যায়ে মূল শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম আগামী ১৫-২১ জুন, ২০২২ সময়ে পরিচালিত হবে।ওই সময়ে সাময়িকভাবে নিযুক্ত তথ্য সংগ্রহকারী ৩ লাখ ৭০ হাজার যারা স্থানীয় শিক্ষিত যুবক/যুব নারী, তারা নির্ধারিত গণনা এলাকার তথ্য ট্যাবলেটের মাধ্যমে সংগ্রহ করবেন। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য-ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের টেকনিক্যাল টিমের প্রধান ড. দিপংকর রায়।

এসআর/এসকেডি