৮ কেজি স্বর্ণ জব্দের ঘটনায় বিমানকর্মী বরখাস্ত
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮ কেজি ওজনের স্বর্ণের বার জব্দের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মী মো. আবদুল আজিজ আকন্দকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারে (বিএফসিসি) স্বর্ণ পাওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া আবদুল আজিজ আকন্দ বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের (বিএফসিসি) পেন্ট্রিম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিমানের ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার পরিদর্শন শেষে এসব তথ্য জানান বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
মাহবুব আলী বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের খবর পেয়ে আজ বিমানবন্দরে আসি। কোন দিক দিয়ে চোরাচালান হয় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কার কাছ থেকে কীভাবে পাচার হয়, নেওয়া হচ্ছে তার খোঁজ। এছাড়া বিমানে কীভাবে খাবার সরবরাহ করা হয় তাও দেখা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, কাস্টমস জানিয়েছেন চোরাচালানের একটি ঘটনা ঘটতে পারে যা তারা আগেই জানতেন। বিমানবন্দরে স্বর্ণ আসার পর তারাই চোরাচালান ধরে। বিমানের ওই কর্মীকে ধরে নিয়ে একটি রুমে আটক রাখা হয়। পরে তাকে দেওয়া হয় পুলিশের কাছে। আটক ওই কর্মীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন আজিজসহ বিমানের অন্যান্য কর্মচারীরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। কারণ যারা বিএফসিসি থেকে বের হয়ে যান তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়া হয়ে থাকে। আজিজও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্যারিয়ারে যাননি। তার ডিউটিও ক্যারিয়ারে ছিল না। এর সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তার কাছে বিমানের কেউ না কেউ এই স্বর্ণ দিয়েছে। এটা আমাদের ধারণা। স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আটক বিমানকর্মী ৪০ কেজি স্বর্ণসহ ধরা পড়েছেন কিন্তু গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে ৮ কেজি। বাকি ৩২ কেজি স্বর্ণ গেলো কোথায়? এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ সংখ্যাটা সঠিক তা কিন্তু নয়। আমরা এ ধরনের কোনো তথ্য পাইনি। কাস্টমস যদি বলে থাকে যে ৪০ কেজি ধরা পড়েছে, তারা বের করে দিক।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু বিমান নয়, বেসরকারি প্লেনে অনেক সময় এই ধরনের চোরাচালান ধরা পড়ে।
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে বিমানের ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারে (বিএফসিসি) অভিযান চালিয়ে আট কেজি ওজনের স্বর্ণের বারসহ মো. আব্দুল আজিজ আকন্দকে আটক করে কাস্টমস। যদিও অভিযান পরিচালনার সমায় বাধার সম্মুখীন হতে হয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের।
এ বিষয়ে ঢাকা কাস্টমস হাউসের উপ-কমিশনার মো. সানোয়ারুল কবির বলেছিলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার দুপুর ১টার দিকে বিমানের ক্যাটারিং সেন্টারে প্রবেশ করতেই বাধার মুখে পড়তে হয়। দুটির একটি গেইট দিয়েও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি কাস্টমস কর্মকর্তাদের। এরপর জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের মাধ্যমে বিমানের ক্যাটারিং সেন্টারে প্রবেশ করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। রাত ৮টার দিকে আব্দুল আজিজ ক্যাটারিং অফিসের গেইটের সামনে আসেন। এসময় এনএসআইয়ের সহযোগিতায় কাস্টমস কর্মকর্তারা আব্দুল আজিজকে আটক করেন।
তিনি আরও বলেন, আটকের পর আব্দুল আজিজকে তল্লাশি করে তার কাছ থেকে কালো টেপ দিয়ে মোড়ানো পাঁচটি স্বর্ণের বারের বান্ডেল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক ওজন প্রায় ৮ কেজি। জব্দ হওয়া এই সোনার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা।
এমএসি/এসকেডি