রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযানে আসার খবরে পালিয়েছেন চাল ব্যবসায়ীরা। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) ফাহমিনা আক্তারের বারবার অনুরোধেও তারা দোকানে ফেরেননি। 

মঙ্গলবার দুপুরে কৃষি মার্কেটে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি টিম। এ সময় মূল্য তালিকায় অসংগতি থাকায় এসএম রাইস এজেন্সি ও আনোয়ার ট্রেডার্স নামে দুই চালের দোকানকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার বলেন, আমরা আজ এসেছি চালের দাম কেন বেড়েছে সেটার খোঁজ নিতে। আমাদের আসার খবরে অনেক চাল ব্যবসায়ী দোকান থেকে পালিয়ে যান। পরে তাদের অনেক অনুরোধ করা হলেও তারা দোকানে ফিরে আসেননি।  

আরও পড়ুন : মৌসুমেও চালের দাম বৃদ্ধি : অ্যাকশনে যাওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

তিনি আরও বলেন, মূল্য তালিকায় অসংগতি পাওয়ায় এসএম রাইস এজেন্সি এবং আনোয়ার ট্রেডার্স নামে দুই দোকানকে চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারা আমাদের জানিয়েছেন, চাল যে দামে কেনেন সেখান থেকে দোকান পর্যন্ত আসতে প্রতি কেজিতে তাদের আরও দুই টাকা খরচ পড়ে। পরে এক টাকা (প্রতি কেজি) লাভে সেই চাল বিক্রি করেন তারা। যদিও মূল্য তালিকায় প্রতি কেজিতে ১০-১২ টাকা বেশি দেখা গেছে। এ জন্য দুই চাল ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। আমাদের মূল উদ্দেশ্য জরিমানা করা নয়। আমরা জানতে চাচ্ছি চালের দাম বাড়ার কারণ।

সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার বলেন, দোকানিরা অভিযোগ করেন, তারা টাকা দিয়েও চাল পাচ্ছেন না। মিল মালিকরা তাদের বলছেন, ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে চালে। তাছাড়া অনেক ব্যবসায়ী অগ্রিম টাকা দিয়েও চাল পাচ্ছেন না। 

ফাহমিনা আক্তার বলেন, যারা চালের দাম বাড়িয়েছে আমরা যেমন তাদের জরিমানা করছি আবার যারা সঠিক মূল্য তালিকা দিয়ে বিক্রি করছে তাদের ধন্যবাদ দিই। শুধু চালের বাজার নজরদারি করছি না মিল মালিকদের নজরদারিতে রাখার জন্য আমাদের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। আশা করি চালের দাম কমে আসবে।

আরও পড়ুন : দিনাজপুরে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা

কৃষি মার্কেটের পাইকারি চাল বাজার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের চালের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছি মিল মালিকদের। তারা বিভিন্ন অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখার পরেও আমরা সঠিক সময়ে চাল পাচ্ছি না। আমরা প্রতি কেজিতে এক টাকা ৩০ থেকে ৪০ পয়সা লাভ করি। আমাদের মধ্যে হয়ত কেউ একটু বেশি দামে চাল বিক্রি করে। তবে তাদের সংখ্যা অনেক কম।

দোকানিরা কেন পালিয়ে গেলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাই মনে করেছে তাদের জরিমানা করা হবে, এ ভয়েই তারা দোকান থেকে পালিয়ে যান। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আমাদের কাছে  চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়েছেন, আমরা তাকে বিষয়টি অবগত করেছি। 

এসএএ/এসকেডি