ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে ইসলামকে সামনে আনেন জিয়াউর রহমান, আর এরশাদ সেটার বাস্তবায়ন করেন বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবু সাঈদ খান।

মঙ্গলবার (৩০ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি আয়োজিত শিবিরের হাতে নিহত জামিল আক্তার রতনের ৩৪তম শহীদ বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘বাংলাদেশে জামাত ইসলামের উত্থান, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি’ শীর্ষক এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আবু সাঈদ খান বলেন, ‘পাকিস্তানি ধ্যান ধারণা ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়েই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। যার ফলে মোশতাক সরকারের সঙ্গে তারা হাত মিলিয়েছে এবং ৭৫-এর মতো ঘটনার জন্ম। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে ইসলামকে সামনে আনেন জিয়াউর রহমান, আর এরশাদ সেটার বাস্তবায়ন করেন।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ১৪ দলের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চর্চা চলছে। কিন্তু সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন করছে সেটি এখন প্রশ্ন। বরং বাম সংগঠনগুলো কিছু সুবিধা নিয়ে সরকারের যে দুর্নাম রয়েছে তার ভাগীদার হচ্ছে।’

রিচার্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (আরডিসি) সাধারণ সম্পাদক জান্নাত ফেরদৌস লাকী বলেন, ‘বিগত ১০ বছরে দেশে সাম্প্রদায়িকতা আরও বেড়েছে। নারীর প্রতিও সহিংসতা বেড়েছে। সামান্য টিপও পড়লে অনেকের সহ্য হচ্ছে না। একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী এর বিরোধিতা করেছিল।’

বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য নুর আহমেদ বকুল সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কালো টাকা আর জঙ্গিবাদের টাকা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে এ টাকার ব্যবহার বেড়ে গেছে। মাদ্রাসা তৈরি হচ্ছে এসব টাকাতে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, ইসলামি ঐক্যজোটের সভাপতি মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, অধ্যাপক মলয় ভৌমিক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, শহীদ ডা. জামিল আকতার রতন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। জামায়াত-শিবিরসহ সাম্প্রদায়িকতা-মৌলবাদ-জঙ্গিবাদবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি রাজশাহীতে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেন। স্বৈরাচার এরশাদ ৮ম সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম প্রবর্তনের চেষ্টাকালে তার বিরুদ্ধে রাজশাহীতে তিনি দুর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৮৮ সালের ৩১ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে একাডেমিক কাউন্সিলের ৩৪ শিক্ষকের সামনেই ছাত্র শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। সেই থেকে এ দিনটিকে ছাত্র মৈত্রীসহ অপরাপর অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনগুলো ‘মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।

এমএইচএন/ওএফ