গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি অনেক বড় বড় কাজ করছেন, এবার দেশের প্রতি নজর দিন। প্রান্তিক চাষিদের প্রতি নজর দিন, এরাই আপনার ভীত হবে। 

তিনি আরও বলেন, না হয় খালেদা জিয়ার মতো কোর্টে কোর্টে ঘুরতে হবে। প্রান্তিক খামারিরা না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না। বর্তমানে প্রান্তিক খামারে শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। এই ছোট-ছোট খামারিরাই আমাদের পুষ্টি যোগাচ্ছে।

রোববার (১৯ জুন) দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিদের দুর্দশা এবং তা থেকে মুক্তির উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান বাশারের সভাপতিত্বে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের মহাসচিব কাজী মোস্তফা কামাল।

তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনে ১০ লাখ মানুষের জমায়েত খরচ দিয়ে ৮ লাখ মুরগী কেনা করা যাবে, যা গরিব মানুষের পুষ্টি ও গড় আয়ু বৃদ্ধি পাবে। দেশে ১৫ লাখ মানুষ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে অপেক্ষমান। নানা জটিলতায় এগুলো আটকে রাখা হয়েছে। ফলে অদক্ষ চালকের জন্য দুর্ঘটনা ঘটছে। আপনি এ বিষয়ে নজর দিন। হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও দক্ষ লোক না থাকায় আপনি বড় বড় কাজ করেও বিপদে পড়বেন।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নিউ নেশনের প্রাক্তন সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. আব্দুল জব্বার শিকদারসহ বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সদস্যরা।

এ সময় বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারি ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ৮ দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো- 

১। কোন হ্যাচারির মালিক বাণিজ্যিকভাবে রেডি ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগী পালন করতে পারবে না। বরং তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

২। খাদ্যের দাম কমাতে হবে এবং খাদ্য ও বাচ্চার মান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতে হবে।

৩। খামারিদের বিদ্যুৎ বিল, শিল্প হারে নিতে হবে।

৪। বিগত ০৭/০৩/২০১০ তারিখে সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা ১ দিনের ব্রয়লার এবং লেয়ার বাচ্চার দাম ৩০ ও ৩২ টাকা হারে দিতে হবে।

৫। রাণীক্ষেত, গাম্বরো ও বার্ডফু জাতীয় জটিল রোগের টিকা ও ওষুধ বিনামূল্যে খামারিদের দিতে হবে।

৬। প্রতিটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সহযোগিতায় উপজেলাধীন সব খামারিদের একটি সমিতির আওতায় এনে জামানত ছাড়া স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

৭। রাণীক্ষেত, বার্ডফ্লু ও প্রাকৃতিক দুর্গোগে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সম্পূর্ণ ভর্তুকি দিতে হবে, অথবা ইন্সুরেন্সের আওতাভুক্ত করে, ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।

৮। প্রত্যেক উপজেলার প্রধান বা বড় বাজারগুলোতে খামারিদের সমিতির অনুকূলে ২/৩ শতক জায়গার ওপর মুরগী ও ডিম বিক্রির দোকান নির্মাণ করে দিতে হবে, তাতে করে মন্দা মৌসুমে খামারিরা নিজেদের মুরগী ও ডিম বিক্রি করে অন্তত মূলধনের কিছুটা হলেও সংগ্রহ করতে পারে।
 
এসএম