ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পর এবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেও হচ্ছে কৃষকের বাজার। ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় ডিএসসিসির ৬টি এলাকায় প্রাথমিকভাবে এ বাজার স্থাপন করা হবে। বাজারে প্রতি সপ্তাহে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাচাই করা ১০ জন কৃষক তাদের উৎপাদিত নিরাপদ পণ্য ক্রেতাদের কাছে সরাসরি বিক্রি করবেন।

মঙ্গলবার ( ২৮ জুন) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শীতলক্ষ্যা হলে অ্যাম্বাসি অব দি কিংডম অব দি নেদারল্যান্ডস, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে আয়োজিত ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রারম্ভিক সভায় এ তথ্য জানানো হয়। 

সভায় বক্তারা বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ খাদ্যের সহজপ্রাপ্যতা নগর এলাকার বাসিন্দাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নগর এলাকায় কৃষকের বাজার স্থাপনের মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অনেকটাই মোকাবিলা করা সম্ভব। কৃষকের বাজার এমন একটি বাজার ব্যবস্থা যেখানে মধ্যস্বত্বভোগীদের অনুপস্থিতিতে কৃষকরা সরাসরি তাদের নিরাপদ খাদ্যপণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেন। ফলে ভোক্তাদের জন্য পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবারের যোগান নিশ্চিতের পাশাপাশি কৃষকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।

সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মমর্তা ফরিদ আহাম্মদ বলেন, কৃষক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে। তা-নাহলে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ কঠিন হবে। যেহেতু উন্মুক্ত স্থানে কৃষকের বাজারটি স্থাপিত হবে, তাই স্টোরেজ ব্যবস্থা প্রদান করা সম্ভব নয়। তাই কোন কোন পণ্য বিক্রি হবে তা নির্ধারণ করে দিতে হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরীক্ষাগারে স্যাম্পল পরীক্ষা করে ভোক্তাকে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে কি না তাও নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে আমরা কাঁচাবাজার স্থাপন করতে যাচ্ছি। কাঁচাবাজারে কৃষকের জন্য আলাদা জায়গা দেওয়া গেলে কৃষকের বাজার কার্যক্রমটি টেকসই হবে এবং খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে।

প্যানেল মেয়র শহীদ উল্লাহ বলেন, বাজার কার্যক্রম পরিচালনার একটি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সবজি-মাছ-মাংস পৃথকভাবে বিক্রি করতে হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কৃষকের বাজার কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরবাসীর নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণ সম্ভব।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম বলেন, ১ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকের বাজার স্থাপনের জন্য উপযোগী, কারণ এখানে কাঁচাবাজার নেই। কিন্তু এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অবিক্রীত পণ্য ব্যবস্থাপনা, কৃষকের পরিবর্তে হকার আসছেন কি না- এসব বিষয় তদারকি করতে হবে।

১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল বাশার বলেন, ছোট হলেও উদ্যোগটি মহৎ। কৃষকের বাজারে নিরাপদ খাবার নিশ্চিত হলে কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে। কৃষকের বাজারকে বড় বড় সুপার শপ, বর্তমান কাঁচাবাজার এবং হকারদের দিক থেকে ঝুঁকি আছে। তাই কৃষকদের বাজারে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে হবে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমান, প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আক্তার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. ফজলে শামসুল কবীর, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম, অঞ্চল-১ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেরীনা নাজনীন, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ফুড সিটি কো-অর্ডিনেটর শরীফা পারভীন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পক্ষে গাউস পিয়ারী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কে জে এম আবদুল আউয়াল প্রমুখ।

এএসএস/এসকেডি