পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানীর বিপণীবিতানগুলোতে দেশি পোশাকের পাশাপাশি ভারতীয় ও পাকিস্তানিসহ নানা ধরনের বিদেশি পোশাকের আধিক্য দেখা গেছে। এসব পোশাকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজত্ব পাকিস্তানি অরগাঞ্জা, পাকিস্তানি গারারা ও ভারতীয় সারারার। এছাড়া ঈদ সামনে রেখে চাহিদা বিবেচনায় সূতি কাপড়েরও আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে।

রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেট ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। তবে ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা এখনও জমে উঠেনি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে বেচাকেনা বাড়বে।

গাউছিয়া মার্কেটের এ প্লাস বুটিকসের স্বত্বাধিকারী সিফাত জানান, পাকিস্তানি অরগাঞ্জা, পাকিস্তানি গারারা, ভারতীয় সারারা কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। এর মধ্যে পাকিস্তানি অরগাঞ্জা দেড় হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় এবং পাকিস্তানি গারারা দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তারা। তবে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন ভারতীয় সারারা। ভারতীয় এই পোশাকটি বিক্রি করা হচ্ছে তিন হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়।

সিফাত বলেন, কোরবানির ঈদে রমজানের ঈদের মতো বেচাকেনা হয় না। কাস্টমারের আনাগোনা কম থাকে। রমজানে তো দোকানে দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। তারপরও যেটুকু বেচাকেনা হচ্ছে সেটাও একেবারে খারাপ না। সামনের সপ্তাহে ক্রেতার একটু চাপ থাকতে পারে।

ছায়া ফ্যাশনের বিক্রেতা জয়নাল আবেদিন জানান, ঈদ সামনে রেখে পাকিস্তানি অরগাঞ্জা বেশি বিক্রি হচ্ছে। আড়াই হাজার থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে অরগাঞ্জা পাওয়া যাচ্ছে। তবে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা দামের ড্রেসগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।

জয়নাল আরও জানান, কোরবানির ঈদের চেয়ে রমজানের ঈদে এসব দামি ড্রেস বেশি বিক্রি হয়। ঈদুল আজহায় ক্রেতাদের ঝোঁক সূতি কাপড়ের দিকে বেশি থাকে।

তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তানি অরগাঞ্জা বেশি বিক্রি করছি। এজন্য দোকানে এই ড্রেসটাই বেশি তুলেছি। এই সপ্তাহে ভালো বিক্রি হয়েছে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে এর চেয়ে ভালো বিক্রি করতে পারব।

মরিয়ম বুটিকসের জাফর আহমেদ জানান, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে তারা সূতি কাপড়ের পোশাক বেশি তুলেছেন। এর মধ্যে স্লাভ কটন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এসব ড্রেস আটশ থেকে ১৫শ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। এছাড়া পাকিস্তানি অরগাঞ্জা ১২শ থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। বুটিকসের ড্রেস বিক্রি করছেন ১২শ টাকা থেকে ১৮শ টাকায়। এছাড়া তাদের দোকানে চেরি ফেব্রিক্স, চিনিগুড়া, তাঁত, লিলেন ও ডিজাইন কটন ড্রেসও পাওয়া যাচ্ছে।

মরিয়ম বুটিকসের বিক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, আমাদের এখানে স্লাভ কটন বেশি বিক্রি হচ্ছে। কারণ এই কাপড়ের ড্রেসে ৩৬ থেকে ৪৮ পর্যন্ত সাইজ হয়। যে কারণে সব বয়সী মেয়েরা পরতে পারে।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে এখনও ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়নি। কোরবানির ঈদে বেচাকেনা হয় পাঁচ-ছয় দিন। আগামী সপ্তাহের ৪-৫ তারিখ থেকে ঈদের বেচাকেনা শুরু হতে পারে।

মার্কেট ঘুরে যেসব ক্রেতা দেখা গেছে তাদের বেশিরভাগই পোশাক কিনেছেন। খুব কম সংখ্যক ক্রেতাকেই খালি হাতে মার্কেট থেকে বের হতে দেখা গেছে।

মহাখালী থেকে বোনের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সুলতানা তৃপ্তি। অনেক দর কষাকষির পর ১৩শ টাকায় ড্রেস কিনেছেন তিনি।

গাউছিয়া মার্কেট থেকে ড্রেস কেনার অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তৃপ্তি বলেন, আগেও গাউছিয়া থেকে ড্রেস কিনেছি। দাম সাশ্রয়ী মনে হয়েছে। এবার ঈদের আগে আসলাম, ভেবেছিলাম দাম বাড়তি হবে। কিন্তু বেশি মনে হয়নি। আজ বোনের জন্য একটা ড্রেস কিনলাম, আরেকদিন সময় নিয়ে নিজের জন্য কিনতে আসব।

এএজে/এসএসএইচ