ঈদের বাকি আর পাঁচদিন, এখনও জমে ওঠেনি কোরবানির পশুর হাট। ১ জুলাই থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানীতে গরুর হাট শুরু হলেও নেই প্রত্যাশিত বেচা-কেনা। দূরদূরান্ত থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যবসায়ীরা তাই হতাশ।

বিক্রেতারা বলছেন, বড় আকৃতির গরুর স্টলগুলোতে কিছু মানুষের ভিড় থাকলেও অধিকাংশই দর্শনার্থী, ক্রেতা নেই বললেই চলে।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটায় রাজধানীর আফতাবনগর পশুর হাট সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গাইবান্ধা থেকে বিশাল আকৃতির ‘বিশাল’ নামের এক গরু নিয়ে এসেছেন বিনয় কুমার বাবু। এক হাজার ৫০০ কেজি ওজনের এ গরুর দাম তিনি চাচ্ছেন ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, হাটে লোকজন খুবই কম আসছেন। যে কারণে ক্রেতার সংখ্যাও কম। ফলে এত বড় গরুটার দাম বলছে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। তবে, ১৫ লাখের নিচে আমি বিক্রি করব না।

আরও পড়ুন : গাবতলী হাটে আসছে কোরবানির পশু

তিনি আরও বলেন, গরুটি আমি ঘরোয়াভাবে লালন পালন করেছি। কোনো ধরনের ওষুধ আমি দিইনি। গরুকে খাইয়েছি ভুট্টার গুড়া, গমের ভুসি, খুদের ভাত আর কাঁচা ঘাস। চার বছর যাবৎ একে আমি লালন পালন করেছি। গত বছরও বাজারে নিয়ে এসেছিলাম, কিন্তু চাহিদামতো দাম না পাওয়ায় বিক্রি করিনি।

নেত্রকোণা থেকে ‘নেত্রকোণার কালোরাজ’ নামের আরেক বড় গরু নিয়ে এসেছেন সোহেল বাদশা। গরুটির ওজন আনুমানিক ১৪০০ থেকে সাড়ে ১৪০০ কেজি। গরুটির দাম চাচ্ছেন তিনি ১৫ লাখ টাকা। 

বাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গতকাল রাতে গরুটি এনেছি, আজকে সকাল পর্যন্ত কোন কাস্টমার আসেনি। বড় গরুগুলো মূলত মানুষ দেখতেই আসে। তবে ঈদের তো আরও বেশ কিছুদিন সময় আছে। আমার মনে হয় আরও এক-দুইদিন পর বাজার ভালোভাবে জমে উঠবে।

গরুটির দাম প্রসঙ্গে এ বিক্রেতা বলেন, আলাপ-আলোচনা করে যা হোক গরুটি ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছে আছে। সাড়ে তিন বছর যাবৎ গরুটি আমি লালন পালন করছি। গরুকে শুধুমাত্র কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি আর খড় খাইয়েছি।

আরও পড়ুন : প্রস্তুতি শেষ, ক্রেতার অপেক্ষায় পশুর হাট

হাটে গরু দেখতে আসা আজমল হোসেন নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, গরু মূলত তিনি ঈদের এক-দুই দিন আগেই কিনবেন। এখন বাজার দেখতে এসেছেন। 

গরুর দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুরুর দিকে দামটা একটু বেশি চাইবে এটাই স্বাভাবিক। যখন বাজারে ক্রেতা বেশি আসবে পাশাপাশি গরুর সংখ্যা বাড়বে তখন দাম নাগালের মধ্যে চলে আসবে।

এ ব্যাংক কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা যারা ঢাকায় থাকি তারা সাধারণত শেষের দিকে গরু কিনি। বলা যায় এটাই আমাদের ‘ট্র্যাডিশন’। আগেভাগে কিনে গরু লালন-পালন করা, খাওয়ানো খুবই কঠিন।

হাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনও পর্যাপ্ত গরু হাটে আসেনি। বেচাকেনা শুরু হলেও সেটি প্রত্যাশিত নয়। 

হাটের প্রচার বিভাগে দায়িত্বরত মো. উজ্জল মিয়া বলেন, আমরা আশা করছি আজ থেকেই হাটে বেচাকেনা পুরোদমে শুরু হবে। গত বছরের মতো যদি আমাদের এ বছর বিক্রি হয়, তাহলে আমাদের খরচটা উঠে যাবে। আর না হলে আমাদের লোকসানের মধ্যে থাকতে হবে। আমরা আশা করছি এবারের হাটে ২০ থেকে ২৫ হাজার গরু বিক্রি হবে।

টিআই/আইএসএইচ/জেএস