প্রস্তাবিত থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা দ্রুত চূড়ান্ত ও কার্যকর করাসহ ছয় দফা দাবিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ। একইসঙ্গে দাবি বাস্তবায়নে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, আহসান হাবীব বুলবুল, মো. জাকির হোসেন, মো. জালাল মিয়া, হাসান মিয়া, রুখসানা আফরোজ আশা, আসমা খাতুন নিশি, সুমন খান প্রমুখ।

সমাবেশে প্রকৌশলী ইমরান রুমনকে সভাপতি ও হাসান মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৫ সদস্যের ঢাকা জেলা কমিটি গঠন করা হয়। এরপর একটি মিছিল প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে ইমরান হাবিব রুমনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি পেশ করে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সড়কে চলাচলের সুযোগ দেওয়ার নামে ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চালক মালিকদের কাছ থেকে নানাভাবে বিভিন্ন হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। কোনো কোনো জেলায় স্টিকার লাগিয়ে হাজার হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে, কোথাও আবার লাইসেন্স দেওয়ার নামে দরিদ্র চালকদের কাছ থেকে  হাজার হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছে। এতে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তপনা উৎসাহিত হচ্ছে এবং রাষ্ট্র বঞ্চিত হচ্ছে ট্যাক্স ও রাজস্ব থেকে। কোথাও আবার এসব বাহন পুলিশের পক্ষ থেকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং জব্দ বা ডাম্পিং করা হচ্ছে। ফলে যেমন কষ্টার্জিত জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে তেমনি দরিদ্র চালক মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা অসহায় হয়ে পড়ছে।  

স্মারকলিপিতে ৬ দফা দাবিও তুলে ধরা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। দাবিগুলো হলো- 

• সংগ্রাম পরিষদের সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করে খসড়া প্রস্তাবিত থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা-২০২১ এর দ্রুত চূড়ান্ত ও কার্যকর করতে হবে।

• প্রস্তাবিত থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযানের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা-২০২১-এর আলোকে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশার দ্রুত নিবন্ধন, রুট পারমিট এবং লাইসেন্স প্রদান করার ব্যবস্থা করতে হবে।

• ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যটারিচালিত যানবাহন আধুনিকায়ন করে লাইসেন্স প্রদানে বাধা প্রদানকারী তিন ও চার চাকার ভিন্ন মডেলের গাড়ি ব্যবসায়ীদের চক্রান্ত রুখতে হবে। 

• ইলেকট্রিক মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ও চলাচল সংক্রান্ত নীতিমালা- ২০২১ এ ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যটারিচালিত যানবাহনকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

• চালক, মেকানিক, ক্ষুদে মালিক, গ্যারেজ মালিকসহ আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত ৫০ লাখ মানুষ ও তাদের উপর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা করার ব্যবস্থা নিতে হবে। বিকল্প ব্যবস্থা বা কর্মসংস্থান ছাড়া রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক উচ্ছেদ করা চলবে না।

• প্রতিটি সড়ক মহাসড়কে স্বল্প গতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন ও সার্ভিস রোড নির্মাণ ও অবৈধ রেকারিং, ডাম্পিং, নির্যাতন, হয়রানি, ব্যাটারি ছিনতাই ও চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। 

এনএফ