প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তলোয়ার-রাইফেল নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার বক্তব্যটি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে গণমাধ্যম। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপে এ কথা বলেন সিইসি।

তিনি বলেন, ‘যেভাবে বক্তব্যটা পত্রপত্রিকায় উপস্থাপিত হয়েছে এটা কখনো বক্তব্য হতে পারে না। আমরা বিভিন্ন সময় হাস্যরস করি আপনারাও করেন। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। এটা যদি কখনো সিইসি মনে করেন সবার অস্ত্র নিয়ে আসা উচিত- তাহলে চার মাস আগে থেকেই ক্রমাগতভাবে বলে যেতাম আপনাদের যার যা আছে- অস্ত্র, তীর-ধুনক, রাইফেল, বোম; এগুলো নিয়ে আসবেন। এটা কথার পিঠে কথা হাস্যরসের সঙ্গে বলা হয়েছিল। এটা আপনারা সহনশীলতার সঙ্গে দেখবেন, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অবাধ সুযোগ মিডিয়াকে দিয়েছি। আমি আগে মন্ত্রণালয়ে সচিব ছিলাম। মিটিং কখনো ওপেন করা না। মিটিং অলওয়েজ কনফিডেনশিয়াল। তারপরে একজন মুখপাত্র অবহিত করেন। কিন্তু কোনো একটা সময় এটা চালু হয়েছে এখানে। আমরা আর এটাকে বন্ধ করিনি। সকলেই শুনতে পারেন, যে স্বচ্ছতাটা আমরা ধরে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যেভাবে আমাদের বক্তব্য বিকৃত হচ্ছে এবং মানসম্মান যেভাবে বিকিয়ে যাচ্ছে, এটা নিয়েও আমাদের এখন চিন্তা-ভাবনা করতে হবে, যে আমরা কতটা ওপেন হবো। আর সকলের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, আমাদের মিডিয়ার যে ভাইয়েরা আছেন, তারা যেন আমাদের বক্তব্যটাকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করেন। কারণ পারিবারিকভাবে, সামাজিকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, নির্বাচন কমিশনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

সিইসি আরও বলেন, ‘সংলাপ নিয়ে মতামত পর্যালোচনা করবো কোন কোন বিষয়ে ঐক্যমত রয়েছে। আর কোন কোন বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বা আমাদের কর্মপরিধির মধ্যে সেগুলো পড়ে কি-না, সেগুলো আমরা সংলাপ শেষে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ঐক্যমত তৈরির জন্য আপনাদের চেষ্টা করা উচিত। আপনাদের জন্য সেই সুযোগটা আরও বেশি। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মোটাদাগে ঐক্যমতে পৌঁছেতে পারেন যে- কেউ সহিংসতা করব না, শান্তিপূর্ণভাবে করব। কেউ সহিংসতা করলে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করব।’

এর আগে সূচনা বক্তব্যে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আমাদের পক্ষ থেকে অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন যেন অনুষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে ভোটাররা যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। আমাদের কিন্তু মূল দায়িত্ব হচ্ছে সেটা। কিন্তু অনেক সময় হয়তো সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে অভিযোগগুলো পাচ্ছি, অনেক সময় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয় না এবং ভোটাররা বাধাপ্রাপ্ত হন বা বিভিন্ন সময় অর্থশক্তি, পেশিশক্তি ব্যবহৃত হয়। যার ফলে নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটারের মতামত প্রতিফলিত হয় না।’

সংলাপে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। এছাড়া চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এতে উপস্থিত ছিলেন।

এসআর/ওএফ