ঢাকায় অনুষ্ঠিত ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে জ্বালানি সহযোগিতা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং আন্তঃবাণিজ্যে জোর দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। সেজন্য জ্বালানি মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোট রাষ্ট্রগুলো।

বুধবার (২৭ জুলাই) ঢাকায় অনুষ্ঠিত ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে জ্বালানি ও খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুটি গুরুত্বপূর্ণ। সম্মেলনে জ্বালানির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জ্বালানি মন্ত্রীদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ঠিক কবে এ বৈঠক হবে সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জোটের সচিবালয় এটি ঠিক করবে।

তেল সমৃদ্ধ ইরান থেকে বাংলাদেশ তেল আমদানি করবে কি না, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ইরান সবার সঙ্গে জ্বালানি শেয়ার করতে চায়। ইরানের ওপর কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। আমরা সেগুলো মেনে চলি। জোট রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য হলে তখন হয়ত আমরা ইরান থেকে তেল আনতে পারব।

এ সময় মোমেন বাংলাদেশের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানান, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি রয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ২০তম ডি–৮ মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সংগঠনের বর্তমান সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদুল্লাহিয়ান এবং তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলু ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এছাড়া তিন সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং দু’জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

সম্মেলন থেকে ডি-৮ অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, ডি-৮ পিটিএ চূড়ান্তকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী অক্টোবর থেকে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন হবে। ইতোমধ্যে মিসর ব্যতীত অন্যান্য সাতটি সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ডি-৮ পিটিএ অনুসমর্থন করেছে।

তিনি বলেন, এবারের সভায় মিশর জানিয়েছে, তারা শিগগিরই ডি-৮ পিটিএ অনুসমর্থন করবে। এছাড়াও ডি-৮ পিটিএ দ্রুত কার্যকর করার লক্ষ্যে ড্রাফট ট্রেড ফ্যাসিলেশন স্ট্র্যাটেজির চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়া চলছে। এবারের সভায় এ বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এই ড্রাফট ট্রেড ফ্যাসিলেশন স্ট্র্যাটেজি শিগগিরই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য থার্ড ট্রেড মিনিস্টার্স মিটিংয়ে গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৫ বছরে জোট রাষ্ট্রগুলোর আন্তঃবাণিজ্যের পরিমাণ ১৪০০ কোটি ডলার থেকে ১২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।

এবারের সম্মেলনে জোট রাষ্ট্রগুলোর মন্ত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও শেষ অবদি তাদের ঢাকায় সশরীরে না থাকার কারণে অপূর্ণতা বা গুরুত্ব কমে গেল কিনা সম্মেলনের, এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, আমরা অনেক আশাবাদী। কেউ সশরীরে উপস্থিত না হলে সেখানে গুরত্ব কমে যাবে বা ফলপ্রসূ কিছু হবে না, এমনটা ভাবা ঠিক হবে না। কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে তারা ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন।

এনআই/এসকেডি